আজ ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লটকন ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা


লাইফস্টাইল ডেস্ক

লটকন ফলটি বর্তমানে বেশ পরিচিত সবার কাছে। এটি মূলত বর্ষাকালীন ফল। এটি এক প্রকার হলুদ রঙের ছোট্ট গোলাকার ফল। টক মিষ্টি স্বাদের এ ফলটি খেতে অনেকেই ভীষণ পছন্দ করেন। আবার অনেকের কাছে লটকনের স্বাদ খুব বেশি ভালো লাগে না। তবে রসালো এই ফলটি খেলে মিলবে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা, যেটা আমরা অনেকেই জানি না।

এ সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছেন ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের পুষ্টিবিদ নুশরাত জাহান।

তিনি বলেন, লটকন পুষ্টি ও ঔষধিগুণে ভরপুর একটি ফল। এটি মৌসুমি ফল হওয়ায় শরীরের জন্য ভীষণ উপকারি। আমাদের খাদ্য তালিকায় সবসময় মৌসুমি ফল রাখার চেষ্টা করা উচিত। এতে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। লটকনে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক, থায়ামিন,ভিটামিন বি, সি ইত্যাদি এবং প্রোটিন ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

লটকনে জলীয় অংশ অর্থাৎ পানির পরিমাণ বেশি থাকে। এটি খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার কারণে ত্বকে নানা ধরনের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। নিয়মিত লটকন খেলে চর্মরোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এটি ত্বকের রুক্ষতা ও ত্বক ফেটে যাওয়া প্রতিরোধ করে। বর্ষায় ফ্লু, জ্বর, সর্দি, কাশির সংক্রমণ হতে পারে। নিয়মিত লটকন খেলে এ সব সংক্রমণজনিত রোগ প্রতিরোধ হয়।

লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। শরীরের ঘা তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ত্বক, দাঁত ও হাড় সুস্থ রাখে। প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খেলে ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ হয়। এতে স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ হয়। লটকনের ভিটামিন বি বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং চোখের রক্তনালীর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ত্বক ও চুল ভালো রাখতে কী খাবেন

শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ত্বক ও চুল ভালো রাখতে খেতে হবে যেসব খাবার
রক্ত, হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারি উপাদান আয়রন রয়েছে লটকনে। এটি হিমোগ্লোবিন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারি খনিজ উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
লটকনে থাকা অ্যামাইনো এসিড ও এনজাইম দেহ গঠন, কোষের ক্ষয়পূরণ, ও কোষকলার সুস্থতায় সাহায্য করে। লটকন খেলে বমি ভাব দূর হয় এবং এটি মানসিক অবসাদ দূর করতে সক্ষম। ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর এ ফলটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফলটি খেতে পারেন। তবে অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো। টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। লটকনে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট না থাকায় সব বয়সের মানুষ এই ফলটি খেতে পারেন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে লটকন।

সতর্কতা

প্রতিদিন ৩-৪ টি লটকন অনায়াসে খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত লটকন খেলে ক্ষুধামন্দা তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি হওয়ায় কিডনি রোগীদের কম খেতে বলা হয় এটি। কিডনি রোগীরা লটকন খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর