অনলাইন ডেস্কঃ পঞ্চাশজন নির্যাতিত ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীকে আবাসিক সুবিধাসহ বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেয়ায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। রবিবার (৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাচেলর প্রোগ্রাম (অটাম-২০২৪) সেশনের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। আইআইইউসির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ ওরিয়েন্টেশনে আইআইইউসির উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান। রাষ্ট্রদূত এসময় বলেন, ‘ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশের খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ ও মানবিক সম্পর্ক। বাঙ্গালীরা যেমন স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে ঠিক সেভাবেই নির্যাতিত ফিলিস্তিনিরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য বহু বছর ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আমি আজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছি। আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের ৫০ জন নির্যাতিত ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীকে আবাসিক সুবিধা সহ বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। এমন মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি উপস্থিত নবীন শিক্ষার্থীদের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।’
এসময় তিনি তার বক্তব্যে আইআইইউসিতে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ও ব্রুনেই হাইকমিশনারের সফরের কথা উল্লেখ করেন এবং সেসব দেশের অর্থায়নে আইআইইউসি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন বিভিন্ন ভবন ও অন্যান্য প্রকল্পের কার্যক্রম প্রসঙ্গে প্রশংসা করেন। এছাড়া কুয়েতের অর্থায়নে আইআইইউসিতে নির্মানাধীন কমিউনিটি হসপিটালেরও প্রশংসা করেন তিনি।
আইআইইউসির উপাচার্য বলেন, ‘জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছিলেন। বাঙ্গালী জাতি সবসময় নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রয়েছে। আজকে উপস্থিত নতুন শিক্ষার্থীদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো, তোমাদেরকে ভবিষ্যৎ ভালো করতে হলে পরিশ্রমের সহিত পড়া লেখা করতে হবে।’ বিশেষ অতিথি ড. নদভী বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে আছে। আমরা আইআইইউসি পরিবারও ফিলিস্তিনের পাশে আছি। আমি উপস্থিত নবীন শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।’ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মছরুরুল মওলা, ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ মাহি উদ্দিন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. জাহেদ হোসেন সিকদার, হাদিস ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সায়েদ নূর।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, বিওটি সদস্য ও মিডিয়া, প্রেস, পাবলিকেশন্স এন্ড এডভারটাইজম্যান্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খালেদ মাহমুদ, বিওটি সদস্য ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর, আইআইইউসি উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মছরুরুল মওলা, ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. মাহি উদ্দিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন হাফিজ, রেজিস্ট্রার আ ফ ম আখতারুজ্জামান কায়সার, ফ্যাকাল্টি ডীন বৃন্দ, ডিপার্টমেন্ট চেয়ারম্যান বৃন্দ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা বৃন্দ। বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনা এবং পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান শুরু হয়। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত হাফেজ জাকারিয়া। এরপর আইআইইউসি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। পরে আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান প্রধান অতিথিকে আইআইইউসির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানের আগে প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ করেন ও আইআইইউসি ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম সঞ্চালনা করেছেন ড. শোয়েব উদ্দিন মক্কী ও আইএএসডব্লিউডির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। এবার অটাম-২০২৪ সেশনের ওরিয়েন্টেশনে ১৯৫০ জন শিক্ষার্থীকে বরণ করা হয়েছে।