অনলাইন ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) আয়োজনে পাঁচদিনব্যাপী ‘আইআইইউসি টেক ফেস্ট ২০২৩’ শুরু হয়েছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির ফ্যাকাল্টি অব সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উদ্যোগে এই ফেস্টিভ্যালের জমকালো উদ্বোধন করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) এর প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর। আইআইইউসির সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধনে সভাপতিত্ব করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর বলেন, ‘ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড় ও সমুদ্র ঘেরা মনোরম পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করেছে। টেক ফেস্টের মত আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগামীর প্রযুক্তি সম্পর্কে পরিচিতি করিয়ে দিয়ে তাদের মনন ও মেধার বিকাশ ঘটানোর সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। বিজ্ঞানের অবিস্মরণীয় নতুন নতুন প্রযুক্তিকে নবীন শিক্ষার্থীদের দ্বারা আয়ত্ত করা সম্ভব হলে তা মানুষের কল্যাণে সহজেই কাজে লাগানো সম্ভব, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে উজ্জল দৃষ্টান্ত হিসেবে উত্থাপিত হবে। আইআইইউসি সেই রকম মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করছে বলে আমি মনে করি।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ট নেতৃত্বে এই সরকার শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয় বলেই শিক্ষা সম্পর্কিত সবকিছুতেই সার্বিক উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। ৫৬০টি মডেল মসজিদ, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্নফূলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এইসব অবকাঠামো গত উন্নয়নের সাথে প্রকৌশলীদের মেধা ও কৌশলগত অবদানের সুযোগ হয়েছে। আইআইইউসির শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য শরীরচর্চার জন্য ব্যায়ামাগার, মেধা চর্চার জন্য আধুনিক লাইব্রেরি, প্রার্থনার জন্য মসজিদ নির্মান করা হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই হাতিরঝিলের আদলে ঘোড়ামরা খালের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আইআইইউসির এইসব উন্নয়নের সাথে বিজ্ঞানের ছাত্র তথা ইঞ্জিনিয়ারদের সম্পৃক্ততা ও অবদান বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’
আইআইইউসির উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ বলেন, ‘যারা দেশকে ভালোবেসে কাজ করেন তাদের প্রত্যাশা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবসম্পদে রুপান্তর করা। এই মানবসম্পদ তৈরিতে প্রৌকশলগত শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) একাডেমিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল কালাম হাজারী, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম সেন্টারের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুর রশিদ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট
অব বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম সেন্টারের সাধারন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার এস. আর. তৌহিদুল ইসলাম, আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও ফিনেন্স কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমেদ চৌধুরী, আইআইইউসির ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, আইআইইউসির রেজিস্ট্রার আ ফ ম আখতারুজ্জামান কায়সার, ওয়ান ব্যাংক সীতাকুণ্ড ব্রাঞ্চের এভিপি ও ব্রাঞ্চ ইনচার্জ কাজী ফারহান জামিল, আয়োজক কমিটির কনভেনর ফ্যাকাল্টি অব সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডীন ডক্টর মো. সামিমুল হক চৌধুরী, আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. মুহাম্মদ জামশেদ আলম। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত পাঠ করা হয় এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. মুহাম্মদ আজিজুল হক। আইআইইউসির ফ্যাকাল্টি অব সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর তত্ত্বাবধানে পাঁচদিন ব্যাপী এ ফেস্টিভ্যালে ১৩ টি ইভেন্টে আইআইইউসি সহ চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়েরের সর্বমোট ২১৭২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। ম্যাথ অলিম্পিয়াড, মোবাইল গেমস এন্ড এপস ডেভেলপমেন্ট কম্পিটিশন, প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, প্রোজেক্ট শোকেস কম্পিটিশন, পোস্টার রিপ্রেজেন্টেশন কম্পিটিশন, আইডিয়া জেনারেশন কম্পিটিশন, মেডিসিনাল প্ল্যান্ট শো কম্পিটিশন, মেকানিক্স অলিম্পিয়াড, সার্কিট সল্যুশন কম্পিটিশন, ডকুফিল্ম কন্টেস্ট, সাইবার গেমিং কনটেস্ট, টেক অলিম্পিয়াড, রোবো সকার কম্পিটিশনে টিম আকারে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রি-ইভেন্টের মাধ্যমে এই ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়েছে। তবে মূলপর্ব আজ উদ্বোধন হয়েছে। এটি আগামি বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে।