অনলাইন ডেস্কঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আশঙকাজনকহারে কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বিষয়ে মতামত চেয়ে সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী। এ বিষয়ে কমেন্টে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। পাঠকদের জানাতে কমেন্টগুলো তুলে ধরা হলো-
এ প্রসঙ্গে মনজুর কামাল চৌধুরী কমেন্টে জানান, ‘ব্যাঙ এর ছাতার মত ফোরকানিয়া ও এবতেদায়ী মাদ্রাসার সংখ্যা বেড়েছে। এটাই মুল কারন। অন্যান্য সমস্যা ও কিছুটা আছে। বছরে হাজার হাজার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে। এবতেদায়ী মাদ্রাসায় ভর্তি হলে তো প্রাইমারী বঞ্চিত হচ্ছে।’
স্ট্রং ম্যান নামক একটি আইডি থেকে করা কমেন্টে উঠে আসে, ‘৯০% টিচার মনোযোগ সহকারে পাঠ দান করে না তাই এই অবস্থা। আর এই শিক্ষকতা করে টাকা গুলো কিভাবে হালাল হবে আমার বুঝে আসে না। ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে হালাল ইনকাম কিন্তু বাংলাদেশের ৯০% সরকারি চাকরিজীবীর ইনকাম হারাম হারাম হারাম। আর এই হারাম ইনকাম দিয়ে অনেকে যাকাত দেয় হজ করে আর সরকারকে গালিও দেয় আর গায়াবানা জানাজার নামাজ পড়ার জন্য জীবন দিয়ে দেয় আর এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মুসলিম।’
মোহাম্মদ নুরুল হক চৌধুরী তার কমেন্টে লিখেন, ‘প্রতিটা অভিভাবকই এখন কম্পিটিশন চাই। শিক্ষার্থীদের রেজাল্টের যুদ্ধ, কার ছেলে কত দামী স্কুলে পড়ে সেটার যুদ্ধ, কোন স্কুলের রেজাল্ট কেমন? কোন বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভিআইপি। কোন বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের জন্য ওয়াইফাই দেয়া আছে। কোন বিদ্যালয়ের ওয়েটিং রুমে ফ্যান আর টিভিতে জলসা চ্যানেল দেখা যায় এসব গুণগতমান বিবেচনা করেই এখন সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করায় আর এসব বিবেচনায় তাদের ভরসা পাশে থাকা বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন।’
অ্যাডভোকেট শাহাদাত শাহরিয়ার চৌধুরী লিখেছেন, ‘নীতিমালা বিহীন নুরানী মাদ্রাসা স্হাপনের কারনে,যেখানে প্রতি কিলোমিটারে ১ টি থাকার কথা সেখানে প্রতি কিলোমিটারে আছে ১০ টি।’
হেলাল উদ্দিন লিখেছেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশুনা মানসম্মত যুগ-উপযোগি নয়। তাই সচেতন অভিবাবকেরা তাদের প্রিয় সন্তান কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিতে চাই না।’
আলমগীর চৌধুরী লিখেছেন, শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার গুণগত মান না থাকার কারণে।
খোরশেদ আলম কমেন্টে লিখেছেন, ‘নুরানি মাদ্রাসা, কে.জি স্কুল অনেক আগে থেকেই আছে। ঐগুলোর কারণে সরকারী প্রাথমিকে ছাত্র সংখ্যা কমে যাচ্ছে একথা সম্পুর্ন সঠিক নয়।সরকারি প্রা.বিদ্যালয়ে সরকার বিনামুল্যে বই, উপবৃত্তি সহ সকল সুবিধা দেয়া সত্বেও ধনী গরীব সব অভিভাবকেরা শতশত টাকা বেতন ফি দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্টানে ছেলে মেয়েদের পড়াচ্ছেন। কারন তারা আশাকরেন প্রাথমিক লেভেলে সন্তানের ভিত মজবুত হউক। অভিভাকরা মনে করেন শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য সরকার যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা দিলেও ঐ সব প্রতিষ্ঠান থেকে মানসম্মত ও গুনগতমান সম্পন্ন সার্ভিস ছাত্ররা পাচ্ছেনা। ফলে প্রাথমিকে সরকারী বিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ মনে করছেন।পক্ষান্তরে সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার মান তুলনামুলক ভাল মনে করাই শিক্ষার্থীরা ভর্তির প্রতিযোগিতা করছে বেশি।
এখন দেখার বিষয় সরকারী প্রাথমিকে সমস্যা কি?
আমার অভিমত হচ্ছে---
#পাঠদানে শিক্ষকদের পেশাদারিত্বের ও আন্তরিকতার ঘাঠতি
#বিশেষ করে মফস্বল এলাকায় উপজেলা শিক্ষাকর্ম কর্তাদের বিদ্যালয় পরিদর্শনে ও তদারকিতে ঘাঠতি।
#শিক্ষক-অভিভাবক-পরিচালনা পর্ষদের সমন্নয়হীনতা।
#বিশেষকরে শিক্ষকরা ক্যাছম্যান এলাকা ভিজিট নাকরা।
#নিয়মিত ছাত্র নাথাকায় অনেক বিদ্যালয়ে নুরানি মাদ্রাসায় পড়ে এমন ভুঁয়া ছাত্র ভর্তি দেখিয়ে উপবৃত্বির সুবিধা দেয়া নেয়া।এহেন অনৈতিক কর্মে নজরদারি নাথাকা।
#পরিচালনা পর্ষদে দক্ষ,শিক্ষিত,আন্তরিক সদস্য নাথাকা।
#সর্বোপরি শিক্ষকরা সরকারের নীতিমালা ও শিক্ষাকারিকুলাম যথাযথ মেনে নাচলা।’
জিয়া হোছাইন চৌধুরী লিখেছেন, ‘নুরানি মাদ্রাসাগুলো নিয়মের মধ্যে আনতে হবে, এরা আগ্রাসীভাবে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করছে,আর যত্রতত্র এইসব প্রতিষ্ঠান যাতে স্থাপন করা না হয় তারজন্য নজরদারি করতে হবে।’
মোহাম্মদ কামাল খান লিখেছেন, ‘সৃজনশীলের নামে পুরা শিক্ষা ব্যাবস্থার বারটা বেজেছে ,আগে মা -বাবারা ছেলে মেয়েদেরকে পড়াতে পারত এখন মা- বাবারা কিছুই বুঝতে পারছে না।’
আবদুল মান্নান লিখেছেন ‘প্রথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার ভিত্তি রচিত হয়। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, বর্তমানে বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখ্যোগ্য হারে কমেছে। এর কারণ হিসেবে যা মনে করছি-
#শিক্ষার্থীর ব্যাক্তিগত আগ্রহ, চাহিদা ও সক্ষমতা সম্পর্কে শিক্ষককের উদাসীনতা।
#শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যে উত্তম যোগাযোগের অভাব।
#বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির স্বক্রিয় অংশগ্রহনের অভাব।
#সমাজের থেকে বিদ্যালয়ের বিচ্ছিন্নতা।
#নিয়মিত তদারকির অভাব।
আরো বেশ কিছু।’