অনলাইন ডেস্কঃ হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি গুলোর কারণে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত ও কমার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) টাইগারপাস্থ চসিক কার্যালয়ে মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে আলাপকালে এসব কথা যুক্তরাজ্যের এই প্রতিনিধি।
সারাহ কুক বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আস্থা বাড়াবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আরো কোন কোন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হতে পারে তা খুঁজছি। যুক্তরাজ্যের আরো অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিশেষ করে চট্টগ্রামে শিল্প কারখানা গড়তে চায়।’
সারাহ বলেন, ‘নগরায়নের যেসব সমস্যা চট্টগ্রাম মোকাবিলা করছে তাতে সহায়তা দিতে ইউএনডিপি যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার অন্যতম প্রধান দাতা যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রামের ইউনিলিভারের এক কারখানাই ৯০০ জন লোকের সরাসরি কর্মসংস্থান এবং আরো প্রায় ২০ হাজার লোকের পরোক্ষ জীবিকার যোগান দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন চসিকের মেয়রের সাথে ইউএনডিপির প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
এসময় চসিক মেয়র চট্টগ্রামের উন্নয়নে ৪টি খাতে যুক্তরাজ্যের অর্থায়ন চেয়েছেন। সারাহ কুককে চসিক মেয়র জানিয়েছেন, বর্তমানে চট্টগ্রামের চারটি খাতের উন্নয়নে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সেগুলো হলো-জলাবদ্ধতা, পয়:নিষ্কাশন, বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা আর অবকাঠামো।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং লজিস্টিকস সক্ষমতা বাড়াতে অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লন্ডনের টেমস নদীর তলদেশের মতো কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল চালু হয়েছে। পাশাপাশি আড়াই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পুরো শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসণে চলছে দশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই ব্যাপক বিনিয়োগের ফলে চট্টগ্রাম বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাজ্য এই সোনালী সুযোগকে কাজে লাগাতে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করলে বেশ লাভবান হবে।’
চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মেয়র রেজাউল করিম মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দ্রুত কমনওয়েলথের সদস্যপদ প্রদান করায় যুক্তরাজ্যের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভবিষ্যতেও সহযোগিতার এ ধারা চলমান থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) ব্রায়োনী কর, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বিষয়ক পরিচালক ড্যান পাশা প্রমুখ।