আজ ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাঙ্গুনিয়ায় গুমাই বিলে আবাদী জমিতে উর্বরা শক্তি হ্রাস


 

মো: নুরুল আবছার চৌধুরী,চট্টগ্রাম উত্তর সংবাদদাতা:

রাঙ্গুনিয়ায় গুমাইবিল ও অন্যান্য ফসলি জমিতে সবুজ ও জৈব সার এর চরম সংকটে কারনে আবাদী জমি ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে। দেশের ২য় বৃহত্ততম ওই গুমাইবিলে লাগাতার রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা দিন দিন কমে আসছে। সরেজমিনে তৃণমূলে থাকা কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গুমাই বিলের অধিকাংশ কৃষক সপ্ল শিক্ষিত হওয়ায় রাসায়নিক সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে তেমন ধারণা নেই। তাই চাষীরা রাসায়নিক সার প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণ প্রয়োগ করে থাকে। অভিজ্ঞ ও শিক্ষিত কৃষকরা জৈবসার প্রয়োগের ক্ষেত্রে মোটেও আগ্রহ নয়। ফলে ওসব অশিক্ষিত কৃষকরা রাসায়নিক সার অধিক ব্যাবহারের ফলে জমিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষিবিদদের মতে, জমি উর্বরা শক্তি বাড়াতে হলে গন্ধক, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশ, দস্তা থাকা খুবই জরুরি। এগুলো না থাকলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বেড়ে উঠার জন্য রাসায়নিক সারের ব্যাপক প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি গোবর ও সবুজ সারের প্রয়োজন হলেও কৃষকরা তা ব্যাবহার করছে না। জৈব ও সবুজ সার প্রাকৃতিক সারের উপকারিতা সম্পর্কে অধিকাংশ চাষিদের জ্ঞান কম। জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী কম গোবর সার ব্যাবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এসব সার সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ না করার ফলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার হলে মাটি পরীক্ষা করে সুষম আকারে তা প্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ওই সুযোগ না থাকায় চাষীরা অনুমানের করে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে থাকেন। ফলে ক্রমশ জমি উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইউরিয়া সার জমিতে প্রয়োগের ফলে ফসফরাস, গন্ধক ও পটাসিয়াম এর পরিনাম একদম কমে যাচ্ছে। পূর্বে একই জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা হতো। বর্তমানে এক জমিতে একই ফসল বারবার চাষ করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, রাসায়নিক সারের অপরিকল্পিত ও একই ফসল বার বার চাষ করার ফলে জমির উৎপাদন ও মাটির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। চন্দ্রঘোনার গুমাই বিলের কৃষক জহির আহমেদ, রহিম উদ্দীন, রতন দাশ জানান, গুমাইবিল রাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম বিল, বাংলাদেশের আড়াই দিনের খাদ্য যোগান দিয়ে থাকে ওই বিল, ওখানকার কৃষক হিসাবে আমরা সব রখমের সার ব্যবহার করি অনুমানের ভিত্তিতে। জমির পাড়ে আমরা কোনদিন কৃষি উপ-সহকারীদের দেখতে পাইনি। সরকার বেতন দিয়ে ওসব কর্মকর্তাদের কৃষকদের পরিচালনা জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। তা না করে তারা বছরের পর বছর উপজেলায় বসে অলস সময় পার করে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক জানান, রাঙ্গুনিয়ায় পৌরসভা সহ ১৫ ইউনিয়ন নিয়ে এই রাঙ্গুনিয়া উপজেলা। এখানে দেশের ২য় বৃহত্তম গুমাইবিল অবস্থিত। শুনেছি গুমাইবিলের কৃষকদের জন্য আলাদা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারী বরাদ্দ প্রদান করে থাকে। ওসব বিষয়ে শুনেছি, কিন্তু কোন রখম প্রশিক্ষণ পাই নাই। এ ব্যপারে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা সভাপতি মাও, জহুর আনোয়ার জানান, দেশের মূল্যবান সম্পদ মাটি, তা রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কৃষকরা যথেষ্ট উপকৃত হবেন বলে তিনি মনে করেন।

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর