আজ ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

যেসব কারণে বাঙালির কাছে আজ স্মরণীয় ২২ জুলাই


চাটগাঁর সংবাদ ডেস্ক: আজ ২২ জুলাই, গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ২০৩তম (অধিবর্ষে ২০৪তম) দিন। বেশ কয়েকটি কারণে আজকের এই দিনটি বাঙালির কাছে স্মরণীয়। চলুন জেনে নেয়া যাক সেইসব ঘটনা।

বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র  হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গুয়াতেমালা: আজকের এই দিনে মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালা বাংলাদেশকে স্বাধীর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। গুয়াতেমালা ১৮২১ সালে স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

প্যারীচাঁদ মিত্রের জন্মদিন: ১৮১৪ সালের এই দিনে বাঙলার এক সম্ভ্রান্ত বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন
বাংলা সাহিত্যের প্রথম ঔপন্যাসিক প্যারীচাঁদ মিত্র। তাঁর ছদ্মনাম ছিলো টেকচাঁদ ঠাকুর। ১৮৫৮ সালে তাঁর রচিত শ্রেষ্ঠ এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাসের নাম ‘আলালের ঘরের দুলাল’। তিনি নারীদের শিক্ষা প্রচারে যথেষ্ট সক্রিয়তার পরিচয় দেন। তিনি বিধবাবিবাহ সমর্থন করতেন। তিনি বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহের বিরোধিতা করেছিলেন। ১৮৮৩ সালের ২৩শে নভেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন।

ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন: ১৮৪৭ সালের এই দিনে বিখ্যাত বাঙালি কৌতুক লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যাযয়ের জন্ম। তিনি সাহিত্যিক হিসাবেও বিখ্যাত। তাঁর প্রকাশিত জনপ্রিয় মাসিক পত্রিকার নাম ছিলো ‘জন্মভূমি’। তাঁর রচিত ‘ডমরু’ এবং ‘কঙ্কাবতী’ চরিত্র খুবই বিখ্যাত। কঙ্কাবতী উপন্যাস সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন ‘এইরূপ অদ্ভুত রূপকথা ভাল করিয়া লেখা বিশেষ ক্ষমতার কাজ। …এতদিন পরে বাঙলায় এমন লেখকের অভ্যুদয়…যাঁহার লেখা আমাদের দেশের বালক বালিকাদের এবং তাঁদের পিতামাতার মনোরঞ্জন করিতে পারিবে।’ ৭২ বছর বয়সে ১৯১৯ সালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

সুমিত্রা দেবীর জন্মদিন: ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী যিনি তাঁর অভিনয় দিয়ে বাংলা এবং হিন্দি উভয় চলচ্চিত্রকেই সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী বাংলা চলচ্চিত্র আঁধারে আলো ১৯৫৭ সালে মুক্তিলাভ করে। তাঁর অভিনীত অন্যান্য জনপ্রিয় বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যে অভিযোগ (১৯৪৭), পথের দাবী (১৯৪৭), প্রতিবাদ (১৯৪৮), জয়যাত্রা (১৯৪৮), স্বামী (১৯৪৯), দেবী চৌধুরানী (১৯৪৯), সমর (১৯৫০) এবং দস্যু মোহন (১৯৫৫), সাহেব বিবি গোলাম (১৯৫৬) উল্লেখযোগ্য। ১৯৯০ সালের ২৮ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর জন্মদিন: ১৯২৬ সালের আজকের এই দিনে মননশীল প্রবন্ধকার, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার খালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অংশ হিসাবে তিনি অপহৃত ও পরে শহীদ হন। তাঁর রচিত সাহিত্য-বিষয়ক গবেষণা, ব্যক্তিগত ও সৃষ্টিশীল রচনা ঢাকার বাংলা একাডেমি থেকে ভাষাবিজ্ঞানী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কর্তৃক সঙ্কলিত ও সম্পাদিত হয়। এগুলো মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর রচনাবলী শিরোনামে তিন খণ্ডের বই আকারে ১৯৭৮, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনী তাঁকে তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা লুতফুল হায়দার চৌধুরীর বাসা থেকে অপহরণ করে। এর পর তাঁর আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় ঐ দিনই তাঁকে হত্যা করা হয়।

২২ জুলাই উপরোল্লেখিত কীর্তিমান কিংবদন্তীদের জন্মদিনের কারণে যেমন স্মরণীয় তেমনি বাঙালীর জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছে বেশ ক’জন গুণী মানুষের মৃত্যু দিবস হওয়ার কারণেও। আসুন এবার সংক্ষেপে তাঁদের সম্পর্কেও জেনে নেয়া যাক-

১৯১৮ সালের এই দিনে প্রথম বাঙালি ইন্দ্রলাল রায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৮ সালে বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী হেমেন্দ্রনাথ মজুমদার, ১৯৭০ সালে ‘মাসিক বসুমতী’ পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক প্রাণতোষ ঘটক, ১৯৭৬ সালে বাঙালি লেখক, ছোটগল্পকার ও ঔপন্যাসিক মণীন্দ্রলাল বসু, ১৯৮৬ সালে প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী, ১৯৯৪ সালে বাঙালি নাট্যসম্রাজ্ঞী সরযূবালা দেবী পরলোক গমন করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর