জি-১০০ আজীবন সম্মননা পেলেন ডা. হালিদা হানুম আখতার। এছাড়াও চিকিৎসা ও কল্যাণকর কাজে অবদান রাখায় আরো চারটি পূরস্কার পেয়েছেন বিশিষ্ট চারজন নারী।
হালিদা হানুম আখতার ৩০ বছর ধরে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সোসাইটি ফর গ্রামীণ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের কমিউনিটি ম্যাটারনিটি প্র্যাকটিশনার হিসেবে প্রশিক্ষণদানে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে ৪টি জি-১০০ পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পেশাদার হিসেবে অসামান্য কাজের জন্য ডা. রুমানা দৌলা ও ডা. নার্গিস আরা বেগম, পুনর্বাসনে অসামান্য অবদানের জন্য ডা. রুবাইয়া আলী এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা ও কল্যাণকর কার্যক্রমের জন্যে পুরস্কার পান ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সাংবাদিক জয়শ্রী জামান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নানের হাত থেকে পূরস্কার গ্রহণের পর তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জয়শ্রী জামান বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ওতোপ্রতোভাবে জড়িত বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে মনোযোগী বিটিএফ। বিশ্বের ৭৫ শতাংশ আত্মহত্যা হয়ে থাকে দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলোয়। বৈশ্বিকভাবে পুরুষের আত্মহত্যা বেশি হোলেও উপমহাদেশে ৭৫ শতাংশ নারীর আত্মহত্যার বিষয়টি গবেষণার। আত্মহত্যাকে অপরাধের আওতায় বা কলংকজনক ইস্যু হিসেবে না রেখে, মানসিক স্বাস্থ্যের আওতায় আনার মিনতি করেন জয়শ্রী জামান।
২০১৪ সালে দুই সন্তান চিরশ্রী জামান মনমন(১৯) ও মুহাম্মাদ বীন আলীম (মুহাম্মাদ)-কে হারান বাসস সাংবাদিক জয়শ্রী জামান। একই দিনে আত্মহত্যা করেন এ দুই কিশোর-কিশোরী। হৃদয় বিদারক এ ঘটনার পর, তিনি গড়ে তুলেছিলেন আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক সংগঠন ‘ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ)। ২০১৫ সাল থেকে তিনি আত্মহত্যা প্রতিরোধে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে এসডিজি লক্ষ্য ৩ ও ৫ অর্জনের জন্য একটি টেকসই পদচিহ্ন রাখার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অগ্রগামীদের সাথে সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও সুস্থতাকে সহায়তা প্রদানে জি-১০০এর দুই দিনব্যাপী কর্মসূচীর দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান ছাড়াও গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস-এর রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. অ্যান জেরার্ড ভ্যান লিউয়েন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান তার বক্তব্যে জি-১০০-এর সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন জি-১০০-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ডা. হারবিন অরোরা রাই ও স্বাগত বক্তব্য দেন জি-১০০ বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক ও গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারজানা চৌধুরী। এছাড়াও শ্রীলংকা, চীন ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের জি-১০০ এর প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিচারকদের কঠোর বাছাইপর্ব শেষে একজনকে আজীবন সম্মাননা ও চারজনকে জি-১০০ বিজয়ী ঘোষণার নেপথ্যে যারা বিচারের রায় প্রদান করেন তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিউিট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফেরহাত আনোয়ার, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. এম মাইনুল হাফিজ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাবুবুর রহমান, জিডি এসিস্ট লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মইনুদ্দিন আহমেদ , রিসার্চ এন্ড কম্পিউটিং সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড (আরসিএস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও নাদিয়া বিন্তে আমিন।
তথ্যসূত্র: বাসস
Leave a Reply