অনলাইন ডেস্কঃ উপজেলার লোহাগাড়ার বড়হাতিয়ায় (অরিদাঘোনা) নির্মিত হ্রদটির বাঁধ কাটার পর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক অঙ্ক প্রাথমিকভাবে নিরুপণ করেছে প্রশাসন। স্থানীয়দের সহায়তায় সরকারি দপ্তরগুলোর সমন্বয়ে এ ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে। গতকাল (৪ জানুয়ারি) ঘটে যাওয়া এ কৃত্রিম দুর্যোগে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ১৮০ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাগুলো। সোমবার (৫ জানুয়ারি) উপজেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল দিনব্যাপী তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে এ ক্ষতি নিরূপিত হয়েছে। তবে ক্ষতির অঙ্কে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য এখনও যোগ হয়নি।
জানা গেছে, বাঁধের পানিতে সাতকানিয়ার মির্জাখীলে অসংখ্য কাঁচা-পাকা সড়কেরও ক্ষতি হয়েছে। তন্মধ্যে সোনাকানিয়া মাদার্শার সংযোগ সড়কটি সেতু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেগুলোর ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ মূল প্রতিবেদনে যোগ হলে মোট ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন মেট্রিক টন চাল ও ১৫০টি কম্বল সহায়তা হিসাবে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন তাৎক্ষনিক সহায়তা পাওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানালেন সাতকানিয়ার কৃত্রিম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা
এ সহায়তা ক্ষতির তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। তারপরও ক্ষতিগ্রস্তরা সহায়তা পেয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল আবছার চৌধুরী। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় পুনর্বাসন ও যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছি আমরা। আশা করছি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সহায়তা দ্রুত পাওয়া যাবে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো খানা-খন্দে ভরে যাওয়ায় যান-বাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সোনাকানিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বাড়ি-ঘর, ক্ষেত-খামারের ফসল নষ্ট হয়েছে। হাঁস, মুরগি, গরু, বাচুর, ছাগল মারা গেছে, পুকুর-জলাশয় প্লাবিত হয়েছে। কাঁদাপানিতে ভেসে গেছে কৃষকের বীজতলা। এতে চলতি মৌসুমের খাদ্য উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনর্বাসনসহ ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক জনপথ গুলোর সংস্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা হোক। কৃষকদের চাষাবাদ শুরু করার স্বার্থে মাছের পোনা, শস্যক্ষেতের বীজ প্রয়োজন। এছাড়া এলজিইডি ও পিআইওর আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো সংস্কার করাও জরুরি। চাষাবাদের স্বার্থে ছোটহাতিয়ার স্লুইচ গেইট, সাইরতলীতে মির্জাখীল দরবার শরিফের গোঁদা (বাঁধ) পুননির্মাণ দ্রুততম সময়ে শুরু করা অপরিহার্য, অন্যতায় এ মৌসুমে চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন আলহাজ্ব নুরুল আবছার চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছোটহাতিয়া পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মৌলানা শামসুল আলম, যুবলীগ নেতা সেলিম উদ্দিন চৌধুরী, ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আহমদ কবির ভেট্টা, নুরুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ প্রমুখ।