চট্টগ্রামে কমছে না করোনা, বাড়ছে ডেঙ্গু। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। চট্টগ্রামের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত আজকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ও নগরীর নয় ল্যাবরেটরি এবং এন্টিজেন টেস্টে গতকাল ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন আক্রান্ত ১৩ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬ এবং বিভিন্ন উপজেলার ৭ জন। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে শহর ও গ্রামের একজন করে আক্রান্ত পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ২৮ জনের নমুনায় শহরের একজনের দেহে ভাইরাসের অস্থিত্ব মিলে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ২১ নমুনায় গ্রামের একটিতে ভাইরাসের উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ৬ নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২ টিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এছাড়া, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১১, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ৫, এপিক হেলথ কেয়ারে ৮ ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১১ নমুনার পরীক্ষা হয়। চার ল্যাবে ৩৫ নমুনার নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ৯ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে গ্রামের ৩ জন করোনায় আক্রান্ত বলে জানানো হয়।
এদিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), ল্যাব এইড ও এভারকেয়ার হসপিটাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ, চমেকহা’য় ১৪ দশমিক ২৮, আরটিআরএলে ১৮ দশমিক ১৮, শেভরনে ৩ দশমিক ৫৭, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪ দশমিক ৭৬, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ৩৩ দশমিক ৩৩ এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল, এপিক হেলথ কেয়ার ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতাল ল্যাবে ০ শতাংশ এবং এন্টিজেন টেস্টে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানানো হয়, এ সময়ে সরকারি হাসপাতালের পরীক্ষাগারে ৬৭ ও বেসরকারি ল্যাবে ৩৭ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত শনাক্ত হন। মোট ৮৬ রোগি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আগের দিন আক্রান্ত শনাক্ত হন ৯০ জন। তবে এদিন নগরীর পাথরঘাটা এলাকার ২৬ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যু ঘটে মা ও শিশু হাসপাতালে।
তাদের তথ্য মতে, চলতি বছরে মোট ২ হাজার ১৭ ডেঙ্গু রোগির মধ্যে সরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে ১ হাজার ৯৭ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৯২০ জনের ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১৩ হন। এদের ২ জন পুরুষ, ৪ জন শিশু ও ৭ জন মহিলা। চিকিৎসাশেষে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩১ জন।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি মাসের ২২ দিনে নগরীর ৮৭৭ ও বিভিন্ন উপজেলার ৩২৫ জন মিলিয়ে চট্টগ্রামে ১ হাজার ২০২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন, যা গত সেপ্টেম্বর মাসের মোট আক্রান্তের দ্বিগুণেরও বেশি। সেপ্টেম্বর মাসে এ সংখ্যা ছিল ৬০১ জন।