মুহাম্মদ আরফাত হোসেন:
চন্দনাইশ-আনোয়ারা সীমান্তবর্তী চাঁনখালী খালের উপর নির্মিত বরকল সেতু নির্মাণ কাজ শেষে গত ৩১ আগস্ট যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
দুই উপজেলার মধ্যবর্তী বরকল ব্রীজটি চাঁনখালী খালের উপর প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১’শ ১৮ মিটার লম্বা ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থ একটি অত্যাধুনিক পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করেছে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বহুল প্রত্যাশিত এ সেতুর কাজ শেষে যানবাহন চলাচলসহ সাধারণ জনগণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
দোহাজারী সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জামাল উদ্দীন বলেছেন, সেতুটি নির্মাণে যথাযথ মেডিগেশন হাইট রাখা হয়েছে, ব্যবহার করা হয়েছে উন্নতমানের স্টিল, ল্যাবরেটরিতে যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ফিল্ডে যে টিমগুলো ছিল তারা নিয়মিত দেখাশুনা করেছেন। ব্রিজের ৩টি স্প্যানে ১৫টি গার্ডার বসানোর মধ্য দিয়ে ব্রীজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
পাশাপাশি সেতুর দুই প্রান্তে ৫’শ মিটার এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষে সেতুটি উম্মুক্ত করা হয়। দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেছেন, বরকল সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি উদ্বোধনের জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন চলতি মাসে সেতুটি আনুষ্টানিকভাবে উদ্বোধন করবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, ১৯৯৪ সালে ১ বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে চাঁনখালী খালের উপর বেইলী ব্রিজ স্থাপন করার দীর্ঘ দুই যুগ পর অবশেষে চলতি বছর আগস্ট মাসের শেষ দিকে ব্রীজটি নির্মিত হয়। ২০১৫ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বেইলী ব্রিজটি পরিদর্শনকালে পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় ২৬ বছর পর ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী ব্রিজ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ব্রিজটি নির্মাণের ফলে চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য, আনোয়ারা অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের মালামাল, সার কারখানার সার পরিবহন সহজ হবে, অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব আসবে।
ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো একধাপ এগিয়ে গেল দুই উপজেলা। তাছাড়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের সাথে সরাসরি যুক্ত হল পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে আমুল পরিবর্তন।
মেট্ট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাসের সহ-সভাপতি ও বিজিএমই নেতা মাহাবুব চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্টান স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে। বিশেষ করে আনোয়ারাতে কেইপিজেড, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ট্যানেল আনোয়ারায় উম্মুক্ত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন হবে। এর ফল পেতে যাচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সুফল পাবে চট্টগ্রামের মানুষ।