খাতুনগঞ্জের ব্যবসার পালে মন্দা হাওয়া লেগেছে। করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব লেগেছে আরো কয়েকটি কারণে। সম্প্রতি সেই তালিকায় যোগ হয়েছে ডলার সঙ্কট ও ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারা।
এ কারণে এ বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের দাম। চলতি সপ্তাহের গত পাঁচ দিনে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় ভোগ্যপণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমদানি সংকটে আমদানিকৃত ভোগপণ্যের বাজার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে চিনি এবং গমের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। তবে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামও বেড়েছে। এখন যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে তা শুধুমাত্র আগামিতে সংকট সৃষ্টি হবে সেই আশঙ্কা থেকেই। অনেক ব্যবসায়ী মনে করছেন, যেহেতু ব্যাংকসমূহ এলসি খুলছে না তাই কয়েকমাস পর ভোগ্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি হতে পারে। অথচ এই মুহূর্তে বাজারে কোন পণ্যের সংকট নেই। সবধরনের পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ আছে। আলাপকালে ব্যবসায়ীরা জানান, অস্থিরতার আভাসের কারণে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে বেচা-কেনাও কমে গেছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডলার সংকটের কারণে যেহেতু এলসি খোলা যাচ্ছে না তার প্রভাব ভোগ্যপণ্যের বাজারে পড়তে শুরু করেছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত বিলাসী পণ্যের আমদানি বন্ধ করে শুধুমাত্র ভোগ্যপণ আমদানির অনুমতি দেয়া। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন চিনি, গম ও শুকনা মরিচের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বাড়ছে অন্যান্য পণ্যের দামও। বিশেষ করে গত ১ তারিখ থেকে ব্যাংকসমূহ এলসি খুলতে পারছে না। অনেক ব্যাংক এলসি’র পেমেন্ট করতে পারছে না। একারণে একধরনের অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হতে চলেছে। এটা অব্যাহত থাকলে ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠবে। এটা নিয়ন্ত্রণে সরকার ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে রেমিটেন্স বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারলে সংকট সমাধান কিছুটা সহজ হবে।
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানান, ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল ছাড়া অন্যান্য পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি ডলার সাশ্রয় করতে এসব পণ্য আমদানিতে ৭৫-১০০ ভাগ মার্জিন নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু জুন-জুলাই থেকে এই নির্দেশনার পরও এসব পণ্য আমদানি তেমন কমেনি। ফলে ডলার সংকট আরো তীব্র হয়েছে। এখন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ডলারের যোগান দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ভোগ্যপণ্যে সর্বোচ্চ ২০ ভাগ মার্জিনে ঋণপত্র খোলার সুযোগ থাকলেও এখন শতভাগ মার্জিন দিয়েও ঋণপত্র খুলছে না বেশিরভাগ ব্যাংক।
তথ্যসূত্র: পূর্বকোণ