মোহাম্মদ কমরুদ্দিন, চন্দনাইশঃ চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দোহাজারী পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন ব্রি- ৭৫ জাতের ধান চাষিরা। প্রতিবছর আমন মৌসুমে আমন ধান আবাদ করে পুরো সংসারের চাহিদা পূরণ করে আসছিলেন এই এলাকার চাষীরা।
চাগাচর ১নং ওয়ার্ডের কৃষক মুন্সি মিয়া, আহমদ হোসেন, ভেট্টা মিয়া ও হাশিমপুরের তালেব আলী জানান, এবার তারা ধার-দেনা করে ও স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কয়েক একর বর্গা জমিতে ব্রি-৭৫ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ফসল তোলার সময়ে এসে দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত উঠেছে তাদের। এবারের ফলন মোটেও আশানুরুপ হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২১ জাতের মধ্যে ব্রি-৭৫ জাতের ধানের আবাদে বেশির ভাগই ছিটিয়ে চাষ করা হয়। চন্দনাইশ এলাকার জনপদে আমনের ওপরই নির্ভর করে থাকেন হাজারো কৃষক। এখন বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। তারা বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসে জানালেও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বরং কৃষকের চাষপদ্ধতিকে দুষছেন।
আরও পড়ুন বুনো ওল বাঘা তেঁতুল
কৃষকরা বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও বীজ ব্যবসায়িদের প্রলোভনে ব্রি-৭৫ জাতের ধান চাষ করেছিলেন তারা। ১ কানি ধান চাষ করতে প্রায় ১০/১৫ হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। ধান চাষে তাদের জন্য প্রনোদনা হিসেবে বছরে কিংবা ছয় মাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মূল্যের প্রনোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেয়া হয়। কিন্তু কোনো প্রশিক্ষণ বা চাষপদ্ধতি জানানো হয় না।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে দোহাজারী ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সৈকত বড়ুয়া বলেন, ‘কৃষকরা সময়মতো সেচ না দেওয়া এবং পরিচর্যার অভাবে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বন্যায় পলি ও কাঁদা জমে এবং সূর্যের তাপদাহ থাকায় চন্দনাইশসহ অধিকাংশ এলাকায় ব্রি-৭৫ জাতের ধান আবাদে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু পরিচর্যার অভাবে এবং বীজবাহিত রোগ থাকতেই পারে সেজন্য হয়ত ফলন ভাল হয়নি। তাছাড়া কৃষকেরা আমাদের পরামর্শ না নিয়ে বিভিন্ন বীজ বিক্রেতার পরামর্শ নেয়। পরে কৃষি অফিসকে দোষারোপ করে আপনাদেরকে ভুল তথ্য দেয়।’ তবে কিছুদিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রনোদনার আওতায় আর্থিক সহযোগিতা কার্যক্রম হাতে নিবেন বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply