ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ দল। কার্যত সেমিফাইনাল খেলার আশা শেষ তাদের। চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে টাইগারদের। তবে এখনো তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার একটি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ। আজ কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে মুখোমুখি হবে দুদল। বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার আশা শেষ হলেও তিনটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ টাইগারদের জন্য। কেননা, এর সঙ্গে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সমীকরণও যে জড়িত। ৮ দলের টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবে বিশ্বকাপের সেরা ৮ দল। এর মধ্যে স্বাগতিক হওয়ায় পাকিস্তান সরাসরি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবে। বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করা। বর্তমানে ২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ টেবিলের নয়ে অবস্থান টাইগারদের। পাকিস্তান ম্যাচের আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান জানান, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার জন্য তাদের জিততে হবে। জয় ভিন্ন অন্য কিছুই তারা এখন ভাবছেন না। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার জন্য আমাদের জিততে হবে। এ মুহূর্তে এই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য আমরা নির্ধারণ করেছি। এর জন্য জেতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই- সেটিই করতে চাই।’
বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে শেষ তিন ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও অস্ট্রেলিয়া। তিনটি ম্যাচই কঠিন হবে। তবে টাইগাররা এখন ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করতে হলে যতটা সম্ভব পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়াটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য। সবশেষ কলকাতায় নেদারল্যান্ডসের কাছে হারলেও একই ভেন্যুতে এবার জয়ের গল্প লিখতে উন্মুখ হয়ে আছেন সাকিবরা। পাকিস্তান বলে তারা আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। কেননা, চলতি বিশ্বকাপে যে ছন্দহীন বাবর আজম, রিজওয়ানরা। ৬ ম্যাচে তাদের জয় মাত্র ২টি। এর মধ্যে শুরুতে নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় পেলেও শেষ চার ম্যাচেই (ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও সাউথ আফ্রিকা) হেরেছে বাবর আজমের দল। বাংলাদেশের মতো কার্যত পাকিস্তানেরও বিশ্বকাপ শেষ! গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। বিশ্বকাপে ছন্দহীন পাকিস্তানকে হারিয়ে তাই জয়ে ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ। সাকিব বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব যেন ম্যাচটা জিততে পারি।’
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সমানে সমান। এর আগে ২ সাক্ষাতে বাংলাদেশের জয় একটি; হারও একটি। তবে দুদলের ওয়ানডে সাক্ষাতে অনেক এগিয়ে পাকিস্তান। ৩৮ ম্যাচে তাদের জয় ৩৩টি। শেষ ৬ সাক্ষাতে আবার বাংলাদেশ এগিয়ে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছে তিন ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল পাকিস্তান। এর পর ২০১৮ সালে আবুধাবির ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ দুই সাক্ষাতে (২০১৯ লর্ডস ও ২০২৩ লাহোর) হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছে টাইগারদের। সবশেষ এশিয়া কাপের ম্যাচটি হারলেও আজ কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার আশা টিকিয়ে রাখতে চান সাকিবরা।
এদিকে ১৯৯২ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশসহ নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করতে চায়। পাকিস্তানের প্রধান কোচ গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্ন বলেন, ‘পরবর্তী তিন ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দিতে চাই। এর পর টুর্নামেন্টের বাকি অংশে কি হবে তা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিতে চাই।’