অনলাইন ডেস্ক
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলের উদ্বোধন হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। উদ্বোধনের পরদিনই এটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় সেতু-সচিব মো. মনজুর হোসেন একথা জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করে। সভায় জানানো হয়, ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারা প্রান্তে অনুষ্ঠেয় এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, 'টানেল নিয়ে মিথ্যা বা নেতিবাচক প্রচারণা হতে পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মিথ্যা বা নেতিবাচক প্রচারণা চালালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।'
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, 'আপনারা এ এলাকার সন্তান, আমরা এ দেশের মানুষ, আপনারা-আমরা মিলেই এ দেশের ভাবমূর্তি বিদেশে উজ্জ্বল করব। কোনো অবস্থাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে– এ রকম কোনো কিছুতে আমরা যুক্ত হব না বা এরকম কোনো কিছুর দিকে নজর দেব না। যদি কেউ দেয়, তাদের জন্য আইন রয়েছে। মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ালেও– তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিছপা হবে না।'
তিনি আরও বলেন, সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু নাগরিক দায়িত্ব রয়েছে, সরকারি কর্মকর্তাদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, জনপ্রতিনিধিদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, রাজনৈতিক নেতারা যেমন দায়িত্বে রয়েছেন, নাগরিক হিসেবেও আমাদের নিজেদের দায়িত্বের প্রতি নজর রাখতে হবে।
সভায় সেতু-সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, 'টানেলের ভেতর জনসাধারণের জন্য নির্দেশনা ব্যবস্থা থাকবে এবং সেখানে ৮টি রেডিও চ্যানেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশনাগুলো চলতে থাকবে। টানেলের ভেতর যেই ফ্রিকোয়েন্সি থাকুক না কেন, গাড়ি যতক্ষণ টানেলে থাকবে ততক্ষণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ দিক-নির্দেশনা চলবে।'
তিনি আরও বলেন, টানেলে কোন ধরনের গাড়ি চলতে পারবে এবং কোনটি চলতে পারবে না– সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। টোল হার নির্ধারণ হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে, যা আমরা বিবেচনা করছি।
পুলিশের টোল মওকুফের অনুরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গাড়িবহর নিয়ে যাবার সময় টোল দেন। এখানে টোল অব্যাহতির কোনো সুযোগ নেই। তবে যারা অন-কল বা অন-ডিউটিতে ইমার্জেন্সিতে থাকবে, তাদের টোল দিতে হবে না।'
দেশের প্রথম টানেলের নামকরণ করা হয়েছে– জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে চীনের চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল)।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের এপর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৯৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে টানেলের পূর্তকাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল) কাজ চলছে। টানেল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলা প্রান্তে টানেলটির সাথে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক রয়েছে।