চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপ-নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনীতির মাঠে ততটাই উত্তাপ বাড়ছে। বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় এ প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে আলোচিত ও চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপ-নির্বাচন বানচালের আশঙ্কা আছে।
তিনি বলেন, ভিন্ন মতাদর্শী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এসময় তিনি বলেন, ‘যা করবেন নিয়ম মেনে করবেন। নির্বাচন বানচাল করার মতো কোনো ইচ্ছা থাকলে সেখান থেকে সরে আসবেন।’
আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন উল্লেখ করে আ জ ম নাছির বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে বিরত আছে। শুধু তা নয়, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি, অতীতের জ্বালাও পোড়াও আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতেও একই পন্থা অবলম্বনের অপচেষ্টায় আছে। এখানে যোগ্য লোকের অভাব নেই। ২৯ জন মনোনয়ন পত্র নিয়েছিলেন। বাকি ২৮ জন প্রার্থীকে সহায়তা করছে।
দেশ ও মানুষের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘যাতে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না, সহিংস পথ পরিহার করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবেন, এ আহ্বান করবো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি। বিদেশি প্রতিনিধিরা তাদের প্রতিক্রিয়া দিবে। আমরা একটা স্বাধীন দেশ। এখন আমরা অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াইয়ে আছি। সেই লক্ষ্যও অর্জিত হবে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আজ ঢাকায় দুটি সমাবেশ। যতটুকু জানি উনারা এক দফার সমাবেশ করবেন। আর আরেকটি শান্তি সমাবেশ। নির্বাচন ঘিরে কোনো সহিংস পরিস্থিতি আমরা আন্তরিকভাবে চাই না। ৩৭টি দলকে অনুরোধ করবো, রাজনীতিকে রাজনীতিতেই রাখবেন। কোনো সহিংসতাকে যেন উস্কে দেওয়া না হয়। গতবার সমাবেশের আগে তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল। যেখানে চেয়েছে সেখানে সমাবেশ করেছে। কিন্তু যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুর দেওয়াল চিত্র ভেঙে দিয়ে তাদের নিচু মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। সেরকম কিছু চাই না। কেউ নিজে থেকে ভোটে না এলে সেটা তাদের বিষয়। ভোটে পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে যা কিছু সব নির্বাচন কমিশন করবে।
তিনি আরও বলেন, নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৩ কোটি সুবিধাভোগীর মধ্যে কতজন এই নগরে কি সুফল ভোগ করছেন তা তালিকা করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবো।
ভোটারদের ভোটদানে অনাগ্রহ বিষয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সাংগঠনিক সর্বশক্তি দিয়ে প্রত্যেক ভোটারের কাছে যেতে চাই। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে।
হিরো আলম বা নুরের মতো তথাকথিত নেতার উত্থান প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘এদের নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করছে বিএনপি। তারা চায় না, দেশ সমৃদ্ধ হোক। তারা রাজনীতিকে ভিন্ন ধারায় পরিচালিত করছে। গুলশান-বনানীতে হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া কি স্বাভাবিক? এটা দুঃখজনক, আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। মানুষকে এসব বিষয় জানাতে চাই, জনগণ যেন মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হয়।’
তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামের কিছু নির্দিষ্ট কষ্ট আছে, কিছু অপ্রাপ্তি আছে। কষ্ট লাঘবে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চট্টগ্রামের ওপর আছে। এখানকার দুঃখ বেদনা তিনি জানেন। প্রত্যাশার সাথে সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টাকে যুক্ত করেছেন। নির্বাচিত হলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করবো। সবার প্রচেষ্টা আন্তরিক হলে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন মশিউর রহমান চৌধুরী, চন্দন ধর, শফর আলী, নঈম উদ্দিন আহাম্মদ, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, বখতেয়ার উদ্দিন খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, জহর লাল হাজারী, ড. নেছার উদ্দিন আহমদ মনজু, ফরিদ মাহমুদ, দেলোয়ার হোসেন খোকা প্রমুখ।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪