সারা বিশ্ব থেকে সৌদি আরবে সমবেত হওয়া ২০ লাখের বেশি মুসলমান হজের মূল আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে তাঁবুনগরি মিনা থেকে হাজির হচ্ছেন আরাফাত ময়দানে। সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজিরা দিতে তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিদায় হজের স্মৃতি বিজড়িত এই ময়দান। সেখানে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত থেকে হজের খুতবা শুনবেন এবং জুমা ও আসরের নামাজ পড়বেন।
এ বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন মসজিদে নামিরার খতিব ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ।
এ খুতবা ২০টির বেশি ভাষায় রেডিও ও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে বিশ্বময়। এই ২০ ভাষার মধ্যে বাংলাও রয়েছে। কোভিড মহামারীর ভয়াবহতা কাটিয়ে দুবছর পর কিছুটা বড় পরিসরে হজ হয়েছিল ২০২২ সালে। তাতে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের ১০ লাখ মুসলমান। এবার হজ ফিরে গেছে মহামারীর আগের রূপে।
সৌদি গেজেট জানিয়েছে, ২০১৯ সালের হজে অংশ নিয়েছিলেন ২৫ লাখ মুসলমান। এরপর এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষ হজে অংশ নিচ্ছেন। এবার যারা হজ করছেন, তারা ১৬০টি দেশের বাসিন্দা। ১ লাখ ২২ হাজার বাংলাদেশিও আছেন তাদের মধ্যে।
নাইজেরিয়া থেকে হজ করতে আসা মোহাম্মেদ হামাদ আরব নিউজকে বলেন, “স্রষ্টার কাছাকাছি আসার এ অনুভূতি অসাধারণ। তিনি সর্বশক্তিমান, কল্যাণ, শান্তি আর সমৃদ্ধির জন্য তার কাছে সরাসরি ফরিয়াদ জানানোর এ এক অনন্য সুযোগ।”
আফগানিস্তান থেকে মক্কায় হাজির হওয়া মোহাম্মদ নুমান বলেন, “আমাকে এবার হজে আসার তৌফিক দিয়েছেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমার কেমন লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের সবার হজ আল্লাহ কবুল করে নিন।” এ বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে রোববার। পবিত্র নগরী মক্কায় কাবা শরীফ তাওয়াফ করে রাতে এশার নামাজের পর সবাই জড়ো হতে শুরু করেন ১০ কিলোমিটার দূরে তাবুনগরী মিনায়।
সোমবার সারা দিন ও রাত তারা সেখানে কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, নামাজ পড়েন জামাতে।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য মঙ্গলবার ভোরের আগেই তারা সমবেত হতে থাকেন আরাফাতের ময়দানে। ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হল হজ।