অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিমের বিরুদ্ধে। অনলাইন জুয়ার অভিযোগ তুলে ফ্রিল্যান্সারকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় গোয়েন্দা টিম। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তুলে নেয় দশ লাখ টাকা। এর বাইরেও কৌশলে তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে নেয়া হয় ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার সমমানের ক্রিপ্টোকারেন্সি।
এ ঘটনা সামনে আসার পর ডিবির যে টিমের দিকে অভিযোগ তাদের ক্লোজড করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সিএমপি। জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিককে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্সিজেন এলাকা থেকে তুলে নেয় গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা। সে সময় তার মুঠোফোন ও টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়া হয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে এনে গভীর রাতে কয়েকবার জোর করে মুঠোফোনে তার আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হয়। পরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হয় ১০ লাখ টাকা। ওই টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নেয়া হয় ভিন্ন দুইটি অ্যাকাউন্টে। এছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকেও সরিয়ে নেয়া হয় ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমাকে ও আমার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায় যে মামলা দেবে, পরে বলেন- এই টাকা কে সরিয়েছে তা উনারা জানেন না। এক কথায় তারা পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। আমি বলেছি, আমার মোবাইল তো আমার হাতে ছিল না, উনাদের হাতে ছিল। উনারা আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়েছেন, তখন আমি দেখিনি কী জন্য নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি খুব ভয়ের মধ্যে, জীবননাশের হুমকির মধ্যে আছি। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। এই কষ্টের কারণে ফ্রিল্যান্সাররা দেশে থাকতে চান না। তার কথায়, দীর্ঘ ১৪ বছর ফ্রিল্যান্সিং করে অর্জিত অর্থ সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন ডিবির পরিদর্শক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
এ ঘটনায় পরিদর্শক রুহুল আমিনসহ দলটির সাত সদস্যকে ক্লোজড করেছে সিএমপি। ডিবি হেফাজতে থাকাকালীন কীভাবে মুঠোফোন থেকে অর্থ ট্রান্সফার হয়, সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এজন্য গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের একটি কমিটি। পাশাপাশি কাউছার আহমেদ নামে এক যুবককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত, কাউছারের অ্যাকাউন্টেই পাঠানো হয় ওই কারেন্সি।
ডিবির সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোছা. সাদিরা খাতুন বলেন, যেহেতু অভিযোগ এসেছে, আমরা তদন্ত কমিটি করেছি এবং টিমে যারা ছিল তাদের ক্লোজড করে রেখেছি। তদন্ত কমিটি দেখবে, ডিবির হাতে মোবাইল আসার পর টাকাগুলো গেল, নাকি আগে বা কোন পর্যায়ে গেল।
তিনি বলেন, টাকাটা যার মোবাইলে গিয়েছে তারাও ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা করেন। এখন আমাদের দেখার বিষয় এর সঙ্গে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু। যদি আমাদের টিমের সদস্যরা এর সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কাউছার পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত। এছাড়া বাইন্যান্স অ্যাকাউন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়ের অভিযোগে আবু বকর ও কাউছারের বিরুদ্ধেও বায়েজিদ বোস্তামি থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
Leave a Reply