চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা যে কোনো সংকটে চন্দনাইশে অসহায় মানুষের পাশে যিনি নির্ভীক হয়ে দাঁড়ান তিনি আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী। তাই তাঁকে এই উপজেলায় অসহায় মানুষের শেষ ভরসাস্থল হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
এবারের বন্যায় পানিবন্দি ৫ সহস্রাধিক পরিবারকে নিজের অর্থ সম্পদ বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে কে হিন্দু কে মুসলমান সেটি তাঁর কাছে মুখ্য ছিলো না। সাম্প্রদায়িকতা ভুলে ধর্ম নিরপেক্ষ কৈয়ূম চৌধুরী ছুটে গিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থদের দ্বারে দ্বারে।
চলতি বছর স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যা দেখেছে চন্দনাইশবাসী। এবার বানের পানিতে ডুবে গিয়েছিলো পুরো চন্দনাইশ। এসময় সবার আগে তিনিই খোঁজ নিয়েছেন চন্দনাইশবাসীর। দিয়েছেন ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা। তাঁর সহায়তা পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা সৃষ্টিকর্তার কাছে তাঁর জন্য অন্তর থেকে দোয়াও করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে চন্দনাইশ উপজেলার মুজিবুল ইসলাম (রানা) চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, চন্দনাইশ যখন ডুবে গিয়েছিলো, তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও চন্দনাইশের বড় বড় অভিভাবক, বড় বড় রাজনীতিবিদ কেউ আসেনি কিন্তু কৈয়ূম চৌধুরী এসেছেন। তিনি খাবার, বস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।’
আল্লাহ দুর্যোগ দিয়েছেন এবং সে দুর্যোগ লাঘবে সহায়তাকারী ফেরেশতার মতো মানুষও পাঠিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চন্দনাইশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এক পরিবারের গৃহবধু জানান, ‘এবারের বন্যায় আমাদের বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছিলো এবং ঘরে থাকা সব শুকনো কাপড় ভিজে গিয়েছিলো। এরপর নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে কৈয়ূম চৌধুরীর দেয়া শুকনো কাপড় পেয়েছি।’
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ আরেকটি পরিবার জানায়, ‘পুরো গ্রাম যখন পানিতে ভাসা শুরু হয়েছিলো, তখন ঘরে থাকা খাবারও শেষ হয়ে গিয়েছিলো। সব জায়গায় যখন খাবার সংকট, সেই দুর্যোগ মুহূর্তে কৈয়ূম চৌধুরী আমার ঘরে খাবারসহ নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়েছে।’
এভাবে ৫ সহস্রাধিক পরিবার পেয়েছে তাঁর সহায়তা। তাঁর এই মানবিক কাজের এখন তিনি এলাকাবাসীর শেষ ভরসাস্থল। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য আরো ত্রাণ সহায়তা দরকার হলে তিনি ব্যবস্থা করবেন বলেও আশ্বস্থ করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যায় চন্দনাইশ ডুবে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি দ্রুত গ্রামে চলে গিয়েছিলাম। দেখলাম গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যাচ্ছে, মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তখন আমি নিজ অর্থায়নে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা করি।’
জনহিতকর কাজে আমি আগে থেকেই নিয়োজিত ছিলাম উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো আমার স্বভাব। সেজন্য আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য করেছিলো।’