অনলাইন ডেস্ক
চাঁদে জমি কিনে স্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলায় বসবাস করা এক বাঙালি যুবক। সঞ্জয় মাহাতো নামে ওই যুবক ১০ হাজার রুপি দিয়ে ওই জমিটুকু সম্প্রতি কিনেছিলেন। জানিয়েছেন, বিয়ে করার আগে স্ত্রীর কাছে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে—একদিন আকাশের চাঁদ এনে দেবেন।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ভারতীয় চন্দ্রযান চাঁদে সফল অবতরণ করার পর চাঁদের জমি কেনার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন সঞ্জয়। তিনি বিশ্বাস করেন, চাঁদের জমি উপহার দেওয়ার মাধ্যমে স্ত্রীর কাছে করা তাঁর প্রতিজ্ঞা বাস্তব রূপ পেয়েছে।
সঞ্জয় বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী বহু বছর ধরেই বিয়ের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম। অবশেষে গত এপ্রিলে আমরা বিয়ে করেছি। প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তাকে চাঁদ এনে দেব। আমি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারিনি। কিন্তু এখন আমাদের বিয়ের পর তার প্রথম জন্মদিনে চিন্তা করলাম, চাঁদের একটি প্লট তাকে উপহার দিলে মন্দ হয় না।’
সঞ্জয় জানান, এক বন্ধুর সহযোগিতায় ‘লুনা সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল’-এর মাধ্যমে চাঁদের ওই জমিটুকু কিনেছেন। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে তাঁর প্রায় এক বছর লেগে গেছে।
চাঁদের জমি কেনার স্বীকৃতি হিসেবে সঞ্জয়কে একটি দলিলও প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি তার (স্ত্রী) জন্য চাঁদে এক একর জমি কিনেছি।’
চাঁদে জমি না কিনে ওই টাকা দিয়ে আপনি অন্য কিছুও তো কিনে দিতে পারতেন—এমন প্রশ্নে সঞ্জয় বলেন, ‘হ্যাঁ, তা পারতাম। কিন্তু চাঁদ আমাদের হৃদয়ের একটি বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। তাই আমরা বিয়ে করার পর এর চেয়ে ভালো কোনো উপহার আর খুঁজে পাইনি।’
জমি কিনলেও চাঁদে তো আর সশরীরে যাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও সঞ্জয় জানান, নিজেদের বাগানে বসে তাঁর স্ত্রী যখন চাঁদের দিকে চেয়ে থাকেন তখন তিনি অন্য রকম এক অনুভূতি লাভ করেন। তাঁদের প্রেমের গল্পে এ বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘ আউটার স্পেস ট্রিটি করে। এ চুক্তি অনুযায়ী, চাঁদের কোনো কিছুর মালিকানা কেউ দাবি করতে পারবে না। তবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে কোনো ধারা এতে নেই।
এই সুযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চন্দ্র অভিযান এবং এর সম্পদ ব্যবহারের একটি নীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে আর্টেমিস অ্যাকর্ড। এতে ২৭টি দেশ ও পক্ষ স্বাক্ষর করেছে। তবে চীন এবং রাশিয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।
তবে কিছু প্রতারক চক্র ওয়েবসাইট খুলে চাঁদে জমি বিক্রির বাণিজ্য করছে। বহু মানুষই না জেনে প্রতারিত হচ্ছেন।