আজ ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যাত্রী দুর্ভোগের আরেক নাম মহেশখালী জেটিঘাট, হয়রানির শেষ নেই


সরওয়ার কামাল, মহেশখালী

৩০ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। জেলা শহর কক্সবাজার আসা যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হল এই মহেশখালী জেটিঘাট। এই ঘাটে যেন থামছে না যাত্রীদের দুর্ভোগ আর হয়রানি। শুধু সাধারণ যাত্রী নয় এই জেটিঘাটে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পর্যটকদেরও। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলে এলেও সেদিকে খেয়াল নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের। ফলে অসহায়ত্ব নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রী ও পর্যটকদের।

ভাটার সময় স্পিডবোট কিংবা যাত্রীবাহী নৌকা থেকে নেমে কাঁদা মাড়িয়ে উঠতে হয় জেটিতে। এ ছাড়া তীর থেকে জেটি পর্যন্ত নৌকা সারি করে রেখে যাত্রীদের পারাপারের ব্যবস্থাও করা হয়। তবে ঝুঁকি নিয়ে নৌকার পর নৌকা ডিঙিয়ে জেটিতে পৌঁছানোর সময় অনেক যাত্রী দুর্ঘটনার শিকার হয়।

নৌযান চালকেরা বলেন, মহেশখালী জেটির সামনের বিশাল এলাকা ভরাট হয়ে যাওয়ায় ২০ বছর ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। জোয়ারের সময় সমস্যা না হলেও ভাটার সময় জেটি থেকে তীরের দূরত্ব দাঁড়ায় ৪০০ মিটার। গত বছর জেটির সম্মুখ অংশ ড্রেজিং করা হয়। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই আবারও ভরাট হয়েগেছে জেটির মুখ। ফলে ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেটি থেকে অন্তত ৪০০ মিটার পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে নৌকা রাখা হয়েছে। ওই সব নৌকার ওপর দিয়ে তীর থেকে জেটিতে এসে উঠছে যাত্রীরা। কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটার পূর্ব পাশে ১৯৮৮ সালে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০০ মিটার দীর্ঘ এই জেটি নির্মাণ করা হয়। পরে জেটির সামনে চর পড়ায় ২০০০ সালে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে জেটির পূর্ব পাশে আরও ১০০ মিটার সম্প্রসারণ করা হয়। কিন্তু এতেও কোনো লাভ হয়নি। ভাটার সময় কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঢাকা থেকে আসা পর্যটক কফিল উদ্দীন বলেন, ‘মহেশখালীর অপরূপ দৃশ্য দেখতে কক্সবাজার থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে স্পিডবোটে এখানে আসি। কিন্তু মহেশখালী চ্যানেলের তীরে স্পিডবোট যখন থামল, তখন জেটি চোখে পড়ল না। কাদা মাড়িয়ে, নৌকার পর নৌকা পার হয়ে তবেই জেটিতে উঠেছি। এমন ভোগান্তি হবে জানলে এখানে পরিবার–পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসতাম না।’

জেটির টোল আদয়ে দায়িত্ব পালনকারী এক কর্মচারী বলেন, দিনে অন্তত ১০-১৫ হাজার মানুষ এই জেটি দিয়ে আসা যাওয়া করে। তার মধ্যে দুই হাজারের মতো পর্যটক থাকেন। ভাটার সময় এসব যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মহেশখালী উপজেলা সমন্বয়ক নোমান উদ্দিন ইলাহি জানান, খাল ড্রেজিংয়ের জন্য বিডব্লিউটিএ কতৃপক্ষকে দুই মাস আগে অবগত করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।যাত্রীদের দুভোর্গ নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি কতৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহি অফিসার হেদায়েত উল্লাহ বলেন, খাল ড্রেজিংয়ের জন্য আমরা বিডব্লিউটিএ কতৃপক্ষকে লিখব।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর