আজ ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দোহাজারী ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া নড়ে না কাগজ


সরকারি নিয়ম না থাকলেও টানা ৭ বছর ভূমি সহকারী পদে কর্মরত আছেন কাজী মো. এনামুল হক

চন্দনাইশ প্রতিনিধি:

চন্দনাইশের দোহাজারী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কাজী এনামুল হক অদৃশ্য ক্ষমতা এবং টাকার দাপটে দীর্ঘ ৭ বছর দোহাজারী ভূমি অফিসে ভূমি সহকারী পদে কর্মরত আছেন। অথচ সরকারি নিয়মই আছে এক কর্মকর্তা এক অফিসে সর্বোচ্চ ৩ বছর চাকুরী করতে পারবেন। দোহাজারী ভূমি অফিসে দীর্ঘ ৭ বছর চাকুরীর সুবাধে তিনি দোহাজারী ভূমি অফিসকে গড়ে তুলেছেন দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে। তার দূর্নীতির বিষয়ে ইতোমধ্যে চট্রগ্রাম জেলা প্রশাসক, ভূমি মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগী সাধারণ জনগণ।

অভিযোগে জানা যায়, চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভা ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কাজী মো. এনামুল হক দীর্ঘ ৭ বছর যাবত ক্ষমতা এবং টাকার দাপটে চাকরী করে আসছেন একই অফিসে। দীর্ঘ দিন এক অফিসে চাকরি করার সুবাদে দূর্নীতির ভূমি অফিস নামে পরিচিত লাভ করেছে দোহাজারী ভূমি অফিস। এই দূর্নীতির সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করা হয় অফিসে খন্ডকালীন কর্মচারীদের। ভূমি অফিসে কেউ সেবা নিতে গেলেই ভয় পায় কারণ সেবার বিপরীতে গুনতে হবে মোটা অংকের টাকা। ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদনে বাদী-বিবাদী থেকে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে দেওয়া হয় প্রতিবেদন। নামজারি প্রস্তাব পাঠাতে দিতে হয় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। এইভাবে সব বিষয়ে টাকা আর টাকা। মোটকথা অফিসে ঢুকলে ঘুষ ছাড়া কোন কাগজপত্র নড়ে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিপুল অর্থের বিনিমেয়ে কাজী এনামুল হক হাসিমপুর এলাকা, জামিজুরী, লালুটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে মৎস্য প্রজেক্ট করার সুযোগ করে দিয়েছেন।

জসিম উদ্দীন জিকু নামে এক ভূক্তভোগী জানান, গত এক মাস আগে তিনি জমির খাজনা দিতে যান দোহাজারী ভূমি অফিসে। ৩৩ বছরের খাজনা বাবদ তার থেকে দাবি করা হয় ৭০ হাজার টাকা।

স্থানীয় শহীদুল ইসলাম নামে আরেক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তিনি গত সেপ্টেম্বর মাসে যথানিয়মে জমির নামজারী করেন। নামজারী অনলাইনে অনুমোদনও হয়। কিন্তু খাজনা রশিদের জন্য আবেদন করলে ১ মাস ১৭ দিন পর ভূমি সহকারী এনামুল হক বলেন, আপনার নামজারীটি খারিজ হয়ে গেছে। কিন্তু তাকে কোন ধরনের নোটিশও প্রদান করা হয়নি। অথচ উক্ত নামজারী করাতে গিয়ে তার ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।

মাহামুদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, তার জমির খাজনা এসেছে ৩২ হাজার টাকা। ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এনামুল হক দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তার থেকে নিয়েছেন মাত্র ১৪ হাজার টাকা। এ টাকার অর্ধেক ৭ হাজার টাকা তার পকেটে রেখেছেন এবং ৭ হাজার টাকা সরকারি খোসাগারে জমা করেছেন। মাত্র ৭ হাজার জন্য তিনি সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত করেছেন। এরকম অসংখ্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে।

দোহাজারী ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কাজী এনামুল হকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডিপ্লোমেসি চাকমা জানান, তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর