আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘুমধুমের স্বর্ণ চোরাকারবারি রোহিঙ্গা আবসার’র বহুমুখী চোরাকারবার


শ.ম.গফুর(উখিয়া)কক্সবাজার প্রতিনিধি >>> রোহিঙ্গা আবসার।চেহারায় মলিনতা আর শারিরীক গঠন কালো হালকা-পাতলা হলেও তার কাজের কিন্তু ওজন আছে।জন্মসুত্রে মিয়ানমারের নাগরিক হলেও এপারে কিন্তু দৃশ্য-অদৃশ্য স্বজন আছে।কিছু স্বজন দৃশ্যমানও।তার দৃশ্যমান ব্যবসা নেই কিন্তু সম্পদ আছে।চালচলন দরিদ্রবেশে হলেও অদৃশ্য ব্যবসায় মোটাংকের পুঁজি-পাট্রা আছে।মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা হলেও এপারে বিয়ে করেছেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে।বিয়ে সম্পাদনে জামানত দিয়েছেন অন্তত আধা কোটি টাকা,এমন জনশ্রুতি রয়েছে।যার কথা বলছি,তার নাম আবসার।মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা। বর্তমানে বসবাস নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পশ্চিমকুলে।তার বাড়ি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমানার জিরো পয়েন্ট লাগোয়া।তার মা গত দেড় যুগ পুর্বে দুই সন্তান নিয়ে এপারে পালিয়ে আসেন।দুই সন্তানসহ দ্ধিতীয় বিয়ে করেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মাষ্টার কামাল পাশার ছেলে বাইগ্যাকে।বাইগ্যার ঘরেই বড় হয় আবসার।সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বাইগ্যার বসতভিটি।সেই ঘরেই বসত করেন আবসার।মাতা ও আবসার রোহিঙ্গা হওয়ার সুবাদে মিয়ানমার হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক চোরাকারবারি রোহিঙ্গা আত্মীয়স্বজন রয়েছে। সে হিসেবে জড়িয়ে পড়েন এবং চোরাচালানে।একক আধিপত্যে চোরাচালান ব্যবসায় সম্পৃক্ত হন আবসার ও তার পুরো পরিবার।মিয়ানমার থেকে আনা ইয়াবা,স্বর্ণের বার,তরল মাদক,রাজস্ববিহীন গরু-মহিষ পাচার করে আনতে থাকেন আবসার এবং তার অনুগত সংশ্লিষ্ট চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সদস্যরা।সে সুবাদে আবসার মিয়ানমার থেকে পাচার করে চোরাই পথে আনা চোরাচালান কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেন।আর এপার থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তরে থাকা বাসিন্দাদের চাহিদার সব মালামাল পাচারের মাধ্যমে যোগান দেন।এতে আবসার’কে আর পিছনে থাকাতে হয়নি।রাতারাতি বড় সওদাগর বনে যান ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের চোরাই ব্যবসায়।ফলে তুমব্রু এলাকার বাইরেও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠানে অংশীদারি ব্যবসা,জায়গা-জমি,নগদ টাকা রয়েছে বলে এলাকাবাসীরা দাবি করছেন।শুধু মিয়ানমার-বাংলাদেশ মধ্যকার উভয়মুখের পাচারের মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য আবসার তথা আবসারের মা ও সৎ বাবার বসত বাড়ি ও ভিটি দিয়ে চলাচল করতে হয়।এতে মিয়ানমার মুখী খাদ্যশস্য পাচার কালে প্রতি শ্রমিক পিছু ২০০ টাকা করে দিতে হয়।যা আবসার ও তার মাতা হাসিনা নিজেই আদায় করে থাকেন চোরাকারবারিদের নিকট থেকেই।

আবসার পুরোদস্তুর চোরাকারবারি। গত প্রায় পনের মাস পুর্বেও তার বাড়িতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী তল্লাশী চালিয়ে খাটের নিচে অভিনব কায়দায় লুকায়িত বেশ কিছু স্বণালংকার(বার) উদ্ধার  করেছিল?।কিন্তু ওই সময় কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আবসার জন্মগত রোহিঙ্গা,তাই মিয়ানমার এবং উখিয়ার ক্যাম্প কেন্দ্রিক রোহিঙ্গা চোরাকারবারিদের সাথে রয়েছে চোরাচালানের  ব্যবসা।তুমব্রু এলাকায় বসবাস হলেও বেশীর ভাগ সময় কাটান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। অথচ বিয়ে করেছেন তুমব্রু পশ্চিমকুলের জনৈক আবুল কালামের কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা’কে।রোহিঙ্গা হওয়ায় ওই বিয়েতে মোটাংকের টাকা জামানত দিতে হয়েছে তাকে।আবসার তার কালো ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয় প্রভাবশালী অনেকের সাথে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা।গড়ে তুলেছেন আত্মীয়তা। আবসারের কালো ব্যবসার কালো টাকার অংশ প্রভাবশালী অনেকেই সুবিধা নেয় বলে সুত্রে জানা গেছে।যেখানে যেভাবে ম্যানেজ করতে হয়,সেভাবে টাকা বিলিয়ে যান। আর সীমান্তে প্রতিযোগিতা মুলক চোরাচালান ব্যবসা করতে গিয়ে গত দেড় বছর পুর্বে জুহুর আলম নামের ঘুমধুমের জলপাইতলী এলাকার এক যুবক চোরাকারবারিদের হাতে রাতের আধারে খুন হয়।ওই মামলায় আবসার এজাহার ভুক্ত আসামী। কিন্তু কালো টাকার জোরে খুনের দায় থেকে রেহাই পেতে অন্তত ১০ টাকা লাখ টাকা ছিটিয়েছেন আবসার, লোকমুখে এমন কথাও প্রচার আছে।এ ব্যাপারে মুঠোফোনে আবসারের নিকট জানতে চাইলে,সে বলেন(আবসার) আমি তুমব্রুতে থাকিনা।তোমার উঠান ও ভিটি জায়গা দিয়ে চোরাই মালামাল আনা-নেওয়ায় প্রতি লেভার ২০০/ টাকা করে নেওয়া হয়,জবাবে আবসার বলেন,না। আমি ওখানে থাকিনা বলেই লাইন কেটে দেন।ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রেের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ধর্মজিৎ সিংহা বলেন,ঘুমধুম ইউনিয়ন যেহেতো সীমান্ত এলাকা।ওখানে সীমান্তে বিজিবি রয়েছে।আমাদের চেয়ে এরা বেশী জানবে।তবে পাচার রোধে পুলিশও টহল তৎপরতায় যান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর