অনলাইন ডেস্কঃ এবার পবিত্র হজ পালিত হয়েছে তীব্র গরমে। তবে গরমের তীব্রতায় রেকর্ডসংখ্যক হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সৌদি আরব জানিয়েছে, আগামী বছর গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হবে সর্বশেষ হজ। এরপর বসন্ত ও শীতে হজ পালিত হবে। গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলের সদস্য ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক গবেষক ড. মনসুর আল মাজরু জানান, ২০২৫ সালে গ্রীষ্মে হজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২০২৬ সাল থেকে হজ বসন্তকালে অনুষ্ঠিত হবে। টানা আট বছর বসন্তে পালিত হবে হজের যাবতীয় কার্যক্রম। এরপর শীতেও হজ অনুষ্ঠিত হবে। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এমনটি ঘটবে।
তিনি বলেন, আগামী মৌসুমে গ্রীষ্মে হজ হবে। এরপর আট বছর বসন্তে চলে যাবে হজের কার্যক্রম। তারপর শীতকালে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
গালফ নিউজ জানিয়েছে, সারাবিশ্বের মুসল্লিরা আগামী বছর গ্রীষ্মে শেষ হজ পালন কররেন। এরপর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বসন্তকালে অনুষ্ঠিত হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেটকে দেশটির আবহাওয়া কেন্দ্রের মুখপাত্র হুসেইন আল কাহতানি বলেন, আমরা আগামী ১৭ বছর গ্রীষ্মকালে হজ প্রত্যক্ষ করব না। অর্থাৎ আগামী ১৭ বছর অন্য ঋতুতে হজের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
এমন ঘটার কারণ
হজের কার্যক্রম আরবি চন্দ্রমাস অনুসারে পালিত হয়। এ কারণে চন্দ্রমাসের হিসাব অনুসারে বসন্ত ও শীতকালে চলে যাবে হজের কার্যক্রম।
আরও পড়ুন হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৩৯২০ জন
আবহাওয়া কেন্দ্রের মুখপাত্র হুসেইন আল কাহতানির বরাতে গালফ নিউজ জানিয়েছে, ঋতুকালীন সময় উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তনের ফলে চন্দ্রমাসের ক্যালেন্ডার প্রতিবছর ১০ দিন পিছিয়ে যায়। ফলে প্রতিবছর হজের তারিখও ১০ দিন পিছিয়ে যায়। হজযাত্রার সময় পরিবর্তন হলে এটি হজযাত্রীদের তীব্র গরম থেকে স্বস্তি দেবে বলেও জানান তিনি।
এবার হজে যত হাজির মৃত্যু
চলতি বছর হজের মৌসুমে তীব্র গরমে সৌদিতে এক হাজারের বেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মারা যাওয়া এসব হজযাত্রীদের বেশিরভাগ নিবন্ধিত ছিলেন না।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রা প্রায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। চলতি হজের মৌসুমে তীব্র গরমে এক হাজারের বেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। তাদের অর্ধেকের বেশি ছিলেন অনিবন্ধিত হাজি।
একটি কূটনীতিক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর হজের মৌসুমে ৬৫৮ জন মিসরীয় হাজি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩০ জনই ছিলেন অনিবন্ধিত। এছাড়া এ বছর প্রায় ১০টি দেশ এক হাজার ৮১ জন হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
এক আরব কূটনীতিক জানান, আরাফার দিবসের আগে নিরাপত্তা বাহিনী তাড়া করলে অনিবন্ধিত হাজিরা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তীব্র গরমে তারা নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, এসব হজযাত্রীর মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল উচ্চ তাপমাত্রা। যা উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি করে।
হজে গিয়ে নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়া, ভারত, জর্ডান, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, সুদান এবং ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানও। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এসব দেশ মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করেনি।
তথ্যসূত্র: কালবেলা
Leave a Reply