মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন, লোহাগাড়াঃ অনলাইন জুয়ার ছোবলে চট্টগ্রামে নষ্ট হচ্ছে তারণ্যের সম্ভাবনা। ২০১৯ সালের পর থেকে এ ব্যধি ছড়িয়েছে আশংকাজনক হারে। এ ধরনের জুয়া পরিচালনায় রয়েছে সাইবার সিন্ডিকেট। ভুলবশত অনেকে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে ঋণগ্রস্থ হচ্ছেন, বেছে নিচ্ছেন আত্মহননের পথ।
সম্প্রতি লোহাগাড়া উপজেলায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে পিপলু দে (২৭) নামক এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জুয়া খেলতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হওয়ার কারণে সে আত্মহত্যা করেছে। সে ইউনাইটেড কনজ্যুমান প্রোডাক্ট লোহাগাড়া জোনের মার্কেটিং অফিসার পদে কর্মরত ছিলো।
পিপলুর মামা নিখিল দে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পিপলু কিছুদিন ধরে অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত ছিলো। গতকাল রাতেও (মৃত্যুর আগের রাতে) তাকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করে বকাঝকা করেছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামে ২০২০ সাল থেকে অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত অপরাধীরা আইনের আওতায় আসতে শুরু করে। সে বছর ‘বিট-৩৬৫’ নামে অনলাইনভিত্তিক জুয়ার সঙ্গে জড়িত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন পুলিশের বিরুদ্ধে ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
পুলিশ সুত্র জানায়, এ ধরনের জুয়ায় আসক্তরা বিভিন্ন পেশায় জড়িত। প্রত্যেকে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার জুয়া খেলে। জুয়ার অর্থ ডলার থেকে বাংলাদেশি টাকায় ভাঙ্গিয়ে নেয়া হয়। ইতোমধ্যে
এ ধরনের জুয়ায় অসংখ্য যুবক ও তাদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে।
অনলাইন জুয়ার বৈশিষ্ট্য হলো শুরুতে লাভবান করে আসক্তি বাড়ানো হয়, পরে সর্বস্ব লুটে নেয়া হয়। ২০২২ সালে ষোলশহর রেলওয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন গ্রীন ভ্যালি আবাসিক এলাকা থেকে চারজনের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। স্মার্টফোনের ব্রাউজার থেকে জুয়ার ওয়েবসাইট ব্যবহার করে খেলা পরিচালনাসহ বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জুয়ার টাকা লেনদেন করছিলো তারা। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বিট ৩৬৫ এর অ্যাকাউন্টস ব্যবহার করছিলো তারা।
পুলিশ বলছে, যেহেতু বর্তমানে প্রায় সবার হাতে স্মার্টফোন এবং সকলে কমবেশি প্রযুক্তি ব্যবহারে আকৃষ্ট তাই লোভে পড়ে অনেকে অনলাইন জুয়ার দিকে ঝুকছেন। এটি প্রতিরোধে পারিবারিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ধরনের জুয়ার বিপরীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
Leave a Reply