আজ ৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশী হজগামীদের খরচ কমছে প্রায় লাখ টাকা


অনলাইন ডেস্কঃ চলতি বছর ২০২৪ সাল থেকে বাংলাদেশের সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ সরকারিভাবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৭৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা কমানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে হজ যাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মো. ফরিদুল হক খান বলেন, ‘হজ যাত্রীরা যাতে একেবারেই যৌক্তিক খরচে হজ্জ পালন করতে পারেন সে বিষয় সরকার তৎপর রয়েছে সরকার। যাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে দাপ্তরিক যে প্রক্রিয়াগুলো আরও কিভাবে সহজ করা যায় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির পরেও হজের খরচ কমানো সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেউ চায় না হজযাত্রী কষ্ট পাক, হজযাত্রা অসুন্দর হোক। গত বছর একজন এজেন্সি মালিক হাজিদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তারপরও একজন হজযাত্রী থেকে যায়নি। সবাই যেতে পেরেছেন। ওই এজেন্সি মালিককে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এজন্য এজেন্সি মালিকরা সচেতন হয়েছেন। তারপরও তাদের যদি কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি হয়, তাহলে আপনারা (হজযাত্রী) অভিযোগ দেবেন। আমরা সেটির শুনানি করে যার যতটুকু শাস্তি পাওয়া দরকার ততটুকু দেব।

আরও পড়ুন আবারো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা

ধর্মমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত এবং এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্ছনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের জন্য হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এ দেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয়বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। কারণ, হজের জন্য বেশ বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া হজ জীবনে একবারই ফরজ। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সে জন্য অবশ্যই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহিহ ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, আপনারা সবাই যাতে সহিহ ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন, সে জন্যই মূলত এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আপনাদের প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনোযোগী হতে পারেন, তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সব কিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ। প্রশিক্ষণটা যত ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারবেন, আপনাদের দক্ষতা তত বেশি শাণিত হবে, আত্মবিশ্বাস ততটাই বাড়বে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা ও উৎকর্ষতার প্রধান হাতিয়ার হলো প্রশিক্ষণ। কোনো কিছু না বুঝলে প্রশিক্ষক যারা থাকবেন, তাদের জিজ্ঞাসা করবেন। যত বেশি প্রশ্ন করতে পারবেন, তত বেশি শিখতে ও জানতে পারবেন। নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।’

হজযাত্রীদের উদ্দেশে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয় আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে। সে দেশের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে যাতে কোনোরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকবেন। আপনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুণ্ণ না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।

উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হজের নিয়ম, হজক্যাম্পে, বিমান বন্দরে, সৌদি আরবে হজে সময় করণীয় ও সার্বিক ব্যবস্থা নিয়ে হজ যাত্রীদের হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ যাত্রীদের সব ধরনের দায়িত্ব ও সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।

তথ্যসূত্র: যুগান্তর


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর