আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মূল্যায়নেও চতুর্ভুজ বৃত্ত ত্রিভুজ!


প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। সদ্য সমাপ্ত শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে নম্বর ও গ্রেড দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক স্তরের সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিকেও চিহ্নভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বোঝাতে নম্বর কিংবা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করা হবে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে দক্ষ বা ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ মানে উন্নতি প্রয়োজন। গত মাসে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এ ধরনের মূল্যায়নের জন্য এখনো শিক্ষকদের কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এমনকি তৈরি করা হয়নি কোনো প্রশিক্ষকও। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়াই নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি কার্যকর করা হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রাথমিক শিক্ষকদের।

গত জানুয়ারি থেকে দেশে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম (কারিকুলাম) চালু করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বন্ধ করা হয়েছে গতানুগতিক পরীক্ষা পদ্ধতি। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের সার্বিক দক্ষতা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এ বছর মাধ্যমিক পর্যায়ে দুই ধাপে ষান্মাসিক ও বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন এবং প্রাথমিকে শিখনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণি এবং প্রাথমিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে।

 

জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর এনসিটিবিতে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর সঙ্গে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১-এর (প্রাথমিক স্তর) সামঞ্জস্যতা পর্যালোচনা’ শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মোখলেস উর রহমান জানান, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১-এ বর্ণিত অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন প্রক্রিয়া প্রাথমিকের শিখন-শেখানোর ক্ষেত্রে যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। সামষ্টিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও গতানুগতিক নম্বরভিত্তিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। এ কারণে তিনি প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়ন কৌশল রূপরেখার আলোকে পরিমার্জন এবং চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিখন-শেখানো সামগ্রী ও মূল্যায়ন কৌশল উন্নয়নের প্রস্তাব করেন

 

এরপর কর্মশালায় উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রাথমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি পর্যালোচনার কথা বলেন। তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাক্রমের ঘাটতি পূরণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী দিতে বলেন। এরই মধ্যে যেসব বিষয়ের শিক্ষক সহায়িকা মুদ্রণের জন্য প্রেসে চলে গেছে, সেগুলো স্থগিত এবং নতুন পদ্ধতির আলোকে পুনর্মুদ্রণ করে বিতরণের নির্দেশনা দেন।

 

সূত্র জানায়, ১২ থেকে ১৫ অক্টোবর ঢাকা পিটিআইয়ে প্রাথমিকের ধারাবাহিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালের ওপর ফিল্ড টেস্ট কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১৯ থেকে ২১ নভেম্বর এনসিটিবিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থাকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সঙ্গে মিল রেখে মূল্যায়নের জন্য নতুন নির্দেশক ও নীতিমালার কর্মকৌশলপত্র প্রণয়নের জন্য একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়।

সূত্র বলছে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাইলটিং হয়। এরপর একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শিক্ষকদের মধ্যে সেটি গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে তা বাতিল করা হয়। এরপর জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রণয়ন করা হয়। সেখানেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আলাদা পদ্ধতিতেই মূল্যায়ন করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এখন দুটিকে এক দৃষ্টিতে দেখা হলে নানা সমস্যার সূত্রপাত হবে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিপিই থেকে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষকরা ডায়েরি-১ ও ডায়েরি-২ ব্যবহার করেন। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের জন্য ‘কে’ (K), দক্ষতার জন্য ‘এস’ (S) এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের জন্য ‘এ’ (A) সূচক ব্যবহার করা হয়। ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন প্রদানের জন্য শিক্ষক ডায়েরি-১ পূরণ করেন। এরপর পাঠভিত্তিক অর্জন যোগ্যতার মানকে শতকরায় রূপান্তর করতে হয়। ধারাবাহিক মূল্যায়নে শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সর্বশেষ ফলাফল সংরক্ষণ করেন এবং তা নির্দিষ্ট পাঠ শেষে ডায়েরি-২-এ লিপিবদ্ধ করেন। অন্যদিকে, মাধ্যমিকে ষান্মাসিক ও বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন হয়। চতুর্ভুজ, বৃত্ত ও ত্রিভুজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা যাচাই করা হয়।

ডিপিই থেকে আরও জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষকদের সরাসরি প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষকরা তিন দিন সরাসরি প্রশিক্ষণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে অনলাইনে মুক্তপাঠে নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের। প্রাথমিকের প্রশিক্ষক তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ সবকিছুই দেওয়া হয়েছে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু প্রাথমিকে নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হলে আবারও প্রশিক্ষক তৈরি করতে হবে, সেজন্য কর্মশালা করতে হবে, প্রচুর অর্থ ব্যয় হবে। একই সঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে অর্থ ব্যয় করতে হবে, সময়ও লাগবে বেশ। কিন্তু প্রশিক্ষক তৈরি ও শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য এ বছর সময় নেই বললেই চলে।

প্রাথমিকের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, তারা নতুন শিক্ষাক্রম ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন বিষয়ে সামান্য ধারণা পেয়েছেন। যে কারণে গত আগস্টে বাধ্য হয়ে শিক্ষাক্রম বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দিয়েছে ডিপিই। স্পষ্টীকরণ এবং শিক্ষক সহায়িকা নির্দেশনার পরও প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক শিক্ষক ঠিকমতো মূল্যায়ন করতে পারেননি। আবার নতুন পদ্ধতি চালু হলে তাতেও সমস্যা। একজন শিক্ষককে দুটি আলাদা মূল্যায়ন পদ্ধতি শিখতে হবে।

প্রাথমিকের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের জন্য তিন দিনের প্রশিক্ষণ যথেষ্ট নয়। পড়াতে গেলে এমন অনেক সমস্যা পাই, যা কীভাবে সমাধান করতে হবে, তার নির্দেশনা নেই। এজন্য প্রশিক্ষণের সময় বাড়ানো উচিত। আবার নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির জন্য অবশ্যই প্রশিক্ষণ লাগবে। বরং বেশি সময় দিয়েই শিক্ষকদের শেখাতে হবে। কারণ, সবার মেধা সমান নয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ কালবেলাকে বলেন, ‘আবছা ধারণা নিয়ে শিক্ষকরা কখনোই নতুন শিক্ষাক্রমের বিস্তরণ বা মূল্যায়ন করাতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলেই তিনি প্রাথমিকের শিশুদের পড়াতে পারবেন, বিষয়টি এমন নয়। আমার মনে হচ্ছে, প্রশিক্ষণ নিয়ে আবারও বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।’

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য শিক্ষক সহায়িকার পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়েছে। যেখানে ডায়েরি-১ ও ডায়েরি-২ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে। হঠাৎ করেই মূল্যায়ন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসায় সেগুলো প্রেসে পাঠানো হচ্ছে না। আবার সময় কম থাকায় নতুন করে শিক্ষক সহায়িকা প্রণয়নও সম্ভব নয়।

এই পরিস্থিতি করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে এনসিটিবি সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মোখলেস উর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘বর্তমানে নির্দেশনাটি যেভাবে আছে, এই বছর সেভাবেই রাখা হবে। যেহেতু শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি হয়ে গেছে, সেজন্য মূল্যায়নের বিষয়টি নির্দেশনা আকারে পরবর্তী সময়ে পাঠানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষকরা জ্ঞান, দক্ষতা, যোগ্যতার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। সে কারণে তারা নতুন করে প্রশিক্ষণ না পেলেও পড়াতে পারবেন। প্রাথমিকেও যোগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়ন চালু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হয়তো পারদর্শিতার সূচক থাকবে। সেটা চতুর্ভুজ, বৃত্ত, ত্রিভুজ হতে পারে। আর মূল্যায়ন করা হবে নৈপুণ্য অ্যাপ দিয়ে।’

জানা গেছে, এডিবির প্রকল্পের আওতায় ‘ট্যানজেরিন টিচ’ অ্যাপ পাইলটিং শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। কিন্তু সেটি বানানো হয়েছে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে। সেক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন শুরু হলে এই অ্যাপ কার্যকারিতা হারাবে। এই অ্যাপ দিয়ে অন্য কিছু করা হবে কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।

এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে অ্যাপটি সংশোধন করা হবে। নতুন কিছু শিখতে গেলে অনেক কিছুই তো বাদ দিতে হবে।’

ডিপিইর প্রশিক্ষণ শাখার একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘এডিবির অর্থায়নে পাইলটিং হিসেবে ট্যানজেরিন অ্যাপ ১২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু রয়েছে। এখন এনসিটিবি যদি নতুন কোনো অ্যাপ চালু করে বা নৈপুণ্য অ্যাপে প্রাথমিককে অন্তর্ভুক্ত করে, তবে এই অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাবে।’

এনসিটিবির পরামর্শক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাথমিকের মূল্যায়নে কিছু ত্রুটি রয়েছে। প্রাথমিকের শিক্ষকদের ডায়েরি-১ ও ডায়েরি-২-এর মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ যাচাই করে তার প্রতিক্রিয়া লিখে রাখতে হয়। অনেক সময়ই শিক্ষক ক্লাসের বাইরে মূল্যায়নের জন্য বেশি সময় পান না। সে কারণে তারা স্বল্প সময়ে অনেক শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করেন। এতে প্রথম শ্রেণির মূল্যায়নে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে একই পদ্ধতি চালু থাকলে সেখানেও একই সমস্যা হবে। তাই রূপরেখার সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এলাইন (একই পদ্ধতির) করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা যে মূল্যায়ন পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন তা যেহেতু সমস্যা সৃষ্টি করেছে, বেশ কয়েকটি উপায়ে (অনলাইন, ভিডিও টিউটোরিয়াল, লিখিত নির্দেশনা) শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। বছরের মাঝামাঝি প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারলে বাকি সময়ে শিক্ষকরা তা প্রয়োগ করতে পারবেন।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘মূল্যায়নে মাধ্যমিকের সঙ্গে কিছুটা তফাত তো থাকবেই। সেটি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের যে মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিখনকালীন মূল্যায়ন, সেভাবেই করব।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর