অনলাইন ডেস্কঃ মহৎ মানুষ পৃথিবী থেকে দৈহিকভাবে প্রস্থান করলেও মহৎ কর্মের গুণে অমর হয়ে থাকে। এজন্যই বলা হয় কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। আধুনিক চট্টগ্রামের রূপকার, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুও তেমনই একজন মহৎ মানুষ। তার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১২ সালের এই দিনে তিনি পরলোক গমন করেছিলেন। ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর এই মহানায়ককে ভুলেনি চট্টগ্রামবাসী। প্রতিবছর তার মৃত্যুবার্ষিকীর দিনটি এলে তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়। তিনি তো কেবল মুক্তিযোদ্ধা বা রাজনীতিবিদ ছিলেন না একাধারে তিনি ছিলেন শ্রমিকনেতা, শিল্পোদ্যাক্তা; দক্ষিণ চট্টগ্রামের মুখপাত্র। তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ইতোমধ্যে ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর জনপদ। আনোয়ারার হাইলধরে মরহুমের গ্রামের বাড়িতে তার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, খতমে কুরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতসহ নানান কর্মসূচি পালন করছে সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিবারের ন্যায় এবারও সেখানে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ এর নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ, আনোয়ারা কর্ণফুলীর বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও তার সম্মানার্থে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসন থেকে চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আখাতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর গ্রামে তার জন্ম। বাবা আলহাজ নুরুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন আইনজীবী, মা খোরশেদা বেগম ছিলেন গৃহীনি। বোয়ালখালী উপজেলার শিল্পপতি মরহুম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মেয়ে নুর নাহার জামানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বর্তমানে তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছে জীবিত আছেন। ছেলেদের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বর্তমান সরকারের ভূমিমন্ত্রী, আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং আসিফুজ্জামান চৌধুরী জিমি পারিবারিক ব্যবসাবাণিজ্য দেখাশোনা করছেন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ১৯৭৭ সাল থেকে মৃত্যুও আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সংসদের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সভাপতি ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের একজন নেতৃস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাংক জগতের পথিকৃৎ। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও আরামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি ফেডারেশান অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই), চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সিসিসিআই) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে গ্রুপ-৭৭ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি এবং ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
Leave a Reply