অনলাইন ডেস্কঃ প্রতিষ্ঠার পর ২৭ বছর ধরে অবহেলিত রয়ে গেছে গারাঙ্গিয়া সোনাকানিয়া আদর্শ বিদ্যালয়। ইউনিয়নের বোর্ড অফিসের ধার ঘেঁষে বিদ্যালয়টির অবস্থান। বিদ্যালয়টির রয়েছে নয়নাভিরাম একটি ক্যাম্পাস। এর আশপাশে রয়েছে জনবহুল কয়েকটি গ্রাম। ওইসব গ্রামের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে প্রতিনিয়ত দূর দূরান্তের স্কুলে যাতায়াত করে। কারণ কিছুদিন আগেও স্থানীয় স্কুলটিতে নিম্ন ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠদানের অনুমতি ছিলো না। তবে বর্তমানে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি স্কুলটি অনুমোদন পেয়েছে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থাপনের। এক্ষেত্রে অবশ্য যুক্ত হয়েছে বেশ কিছু শর্ত। সেই শর্ত মেনেই এগুচ্ছেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।
এখন তাদের লড়াই স্কুলটিকে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পর্যন্ত নেওয়ার। কমিটিটিকে সহযোগীতা করছেন চট্টগ্রাম ১৫ আসনের সাংসদ প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। সম্প্রতি তিনি স্কুলটির জন্য নিজ তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন।
চট্টগ্রামের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, স্কুলটিকে আগামি ১ বছরের মধ্যে নিজস্ব জমিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে, সেইসাথে যোগাড় করতে হবে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ। এছাড়া নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের জন্য ১৮ লাখ টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২০ লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানের নামে সঞ্চয়পত্র স্থায়ী আমানত হিসাবে (এফডিআর) জমা করতে হবে এবং প্রমাণক প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করতে হবে। যদি কোনো শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হয় তাহরে সরকার অথবা বোর্ড যে কোনো সময় এ অনুমোদন বাতিল করতে পারবে।
এসব শর্তপূরণের লড়াইয়ে নেমেছেন স্কুলটির পরিচালকেরা। তাদের এ লড়াইয়ে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক শিক্ষানুরাগী নুরুল আবছার চৌধুরী।
আরও পড়ুন গারাঙ্গিয়া সোনাকানিয়া আদর্শ বিদ্যালয়কে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থাপনের অনুমতি
এ সম্পর্কে আলাপকালে স্থানীয় প্রবীণ আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রায় বিলুপ্ত একটি বিদ্যালয়কে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন জননেতা নুরুল আবছার চৌধুরী। গারাংগিয়া সোনাকানিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কে বিভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নতকরণে সুধী ও অভিভাবক সমন্বয়ে মতবিনিময় সভা করছেন। শিক্ষার জন্য দিনরাত নিজেকে বিলিয়ে দিতে সাতকানিয়ায় তার মতো কাউকে দেখা যায়নি। কথাটা জেনেই বলেছি। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।’
নুরুল আবছার চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘১৯৯৬ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি না থাকায় বিভিন্ন স্কুল থেকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতো শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর মনে দীর্ঘদিন হতাশা ও আক্ষেপ ছিলো। বিষয়টি বিবেচনা করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করা হলে গত ২৬ জুন মঞ্জুরী কমিটির সভা ও ৯ আগস্ট বোর্ড কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুলটি নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে। বোর্ডের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হলে, সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে ইনশাহ আল্লাহ ভবিষ্যতে এই স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও অনুমতি পাবে।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এই স্কুলটি যোগ্য অভিভাবকের অভাবে অবহেলিত। এলাকার কৃতি সন্তান, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব নুরুল আবছার চৌধুরী বোর্ড সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে স্কুল স্থাপনের অনুমতি এনে দিতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য তার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
Leave a Reply