চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ চট্টগ্রামে জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। চলতি বছরের মোট আক্রান্তের প্রায় ৮৩ শতাংশই জুলাই মাসে শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জনই জুলাই মাসে মারা গেছেন। যা অন্যান্য বছরের এ সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে কেউ মারা না গেলেও ২০২১ সালে ৫ জন এবং ২০২২ সালে মারা গেছেন ৪১ জন। তবে শঙ্কার বিষয় হলো, গত বছর জুলাই পর্যন্ত মাত্র একজন মারা গেলেও এ বছর জুলাই পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫ জন। শক সিনড্রোম ও হেমোরেজিক অবস্থা ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে জানান চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৭৬ জন। এর মধ্যে জুলাই মাসে আক্রান্ত ২ হাজার ৩১১ জন। যা এ বছর মোট আক্রান্তের ৮৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। গত জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল মাত্র ২৮৩ জন। এছাড়া মে মাসে ৫৩ জন, এপ্রিল মাসে ১৮ জন, মার্চ মাসে ১২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন এবং জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত পাওয়া যায় ৭৭ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদৌস বলেন, ‘বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। কোথাও পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না। জরিপে দেখা গেছে, নগরের আকবর শাহ, ষোলশহর, পাঁচলাইশ এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকায় এডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। তবে চট্টগ্রামের অন্য এলাকায় এডিস মশা পাওয়া যাবে না বা ডেঙ্গু রোগ ছড়াবে না তা কিন্তু নয়। একটি মশা এক কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে। সুতরাং মানুষকে সচেতন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নগরীতে মশার লার্ভা ধ্বংসের ক্রাশ প্রোগ্রাম এবং মশার ওষুধ ছিটানো হয় দিনের বেলায়। কিন্তু মশার ওষুধ ছিটানোর উপযুক্ত সময় হলো সন্ধ্যা। এসময় ওষুধ ছিটালে অধিক মশা মারা যায়।’
দিনের বেলা এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে তেমন কোনো সুফল আসবে না বলেও জানান তিনি।
ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বর হলে খাবারের প্রতিও বিশেষভাবে মনযোগী হতে হবে। এছাড়া সবার আগে সচেতনতা প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়া জরুরি। যেকোনও সময় ঘুমাতে গেলে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।’
Leave a Reply