আজ ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

আমন আবাদে শঙ্কায় কৃষক


মো.ইকবাল হোসেন. সাতকানিয়া প্রতিনিধি: অনাবৃষ্টি ও তীব্র খরার কারণে আমন ধান আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সাতকানিয়ার কৃষকরা। এজন্য চলতি বছর এ অঞ্চলে আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতীতের চেয়ে কম নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, সাতকানিয়ায় আমন ধান রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা, কিন্তু চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং সেচের পানির স্বল্পতার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট থাকলেও বর্ষাকালে এ অঞ্চলে পানির সংকট থাকে না। বৃষ্টি কম হওয়ায় আমন ধানের বীজও বুনতে পারেনি এ অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষক। যাঁরা সেচের জন্য পানির পাম্প বসিয়ে বীজ বুনেছেন প্রচন্ড তাপদাহ আর প্রখর রোধে অনেকের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। আষাঢ়ের পর
এখন শ্রাবন মাস চলছে তারপরও বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের কৃষকরা চাটগাঁর সংবাদকে জানান, ‘এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় আমন আবাদ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আষাঢ মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির পাম্প বসিয়ে বীজ বুনতে হয়েছে। কিন্তু এখন শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় চাষাবাদ নিয়ে আশংকায় আছি। আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হলে নিশ্চিতভাবে ধান রোপণ করা যাবে।’

আমিলাইষ ইউনিয়নের আমন চাষি কৃষক মো. হারুন চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘বীজ বুনলেও বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা ফেটেঁ চৌচির হয়ে গেছে। এখন ধানের চারা কিনে রোপণ করতে হবে । বৃষ্টি না হওয়ায় টাক্টর দিয়ে ফসলি জমি চাষাবাদের উপযোগি করতে পারছিনা। বীজ একমাসে রোপণের উপযোগী হয়ে যায়। কিন্তু জমি তৈরী করতে না পারায় এখনও দুশ্চিন্তায় আছি। দেরীতে চারা রোপণ করলে ফসলও কম হয়।’

সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছর ২০২৩ সালে পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন মিলিয়ে ১১ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছর ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১১ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে। গতবছর উৎপাদন হয়েছিলো ৩৪ হাজার ২২১ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন। এবছর যেসব জাতের আমন ধান রোপণ করা হবে সেগুলো হলো- ব্রি-ধান ৪৯, ব্রি-ধান ৭৫, ব্রি-ধান ৮৭, ব্রি-ধান ৯৩, ব্রি-ধান ৯৫,বিনা ধান ১৭, বি-আর ২২, বি-আর ২৩। হাইব্রিড জাতের মধ্যে ধানীগোল্ড, এরাইজ এজেড ৭০০৬ ও সুবর্না ৮।

এ প্রসঙ্গে সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘কোনো জমি অনাবাদি থাকবে না, দেরিতে হলেও চাষ করা হবে। অনাবৃষ্টির কারণে আমন ধান রোপণ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সম্পূরক সেচ প্রদানের মাধ্যমে রোপণ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মনিরুজ্জামান চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘সঠিক বয়সী চারা রোপণ করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার, সারিতে ধান রোপণ করলে ফলন বাড়ে এবং পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়।’

এছাড়া যেকোনো প্রয়োজনে চাষিদের কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর