চাটগাঁর সংবাদ ডেস্ক: সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও চিকিৎসকদের চেম্বার-অপারেশন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও রোগীর স্বজনেরা। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম শাখা। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ক্যাব চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুইজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের কারণে অবস্ট্রেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এ ধরনের সিদ্ধান্ত অমানবিক ও অন্যায়। যা মেনে নেয়া যায় না।
এজন্য রোগীদেরকে জিম্মি করে, সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা বন্ধের দাবি জানায় ক্যাব।
চিকিৎসকদেরকেও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে জানানো হয়, আইনি জটিলতা আইনীভাবে মোকাবেলা করা উচিত। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে হীন ষডযন্ত্রে ধর্মঘটের ডাক দেয়া জনগণের চিকিৎসা সেবার মতো মৌলিক অধিকার খর্ব করার সামিল।
অনতিবিলম্বে এ ধরনের অনৈতিক, অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে আদালতের কাছে প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে অবৈধ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, চিকিৎসা পেশা একটি মহান সেবাধর্মী পেশা হলেও বর্তমানে সনদবিহীন, ভুয়া, অসাধু চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের কারণে এ মহান পেশা কলুষিত হচ্ছে। এ পেশাকে কাজে লাগিয়ে অনেকে দ্রুত কোটিপতি হবার বাসনায় লিপ্ত। রোগীর সেবা, মানবতার সেবার চেয়ে অর্থই অনেকের কাছে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও সুযোগ সুবিধা থাকলেও রোগীরা সেখানে নুন্যতম চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। রোগীদেরকে বেসরকারি ক্লিনিক ও চেম্বারে যেতে পারমর্শ দেয়া হয়। একইসাথে যে কোনো মানুষ রোগাক্রান্ত হলেই প্যাথলজিকাল টেস্ট করান চিকিৎসকরা। এ কারণে প্যাথলজিকাল ল্যাব গুলি ব্যাঙের ছাতার মতো শহর, গ্রাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আর ক্লিনিকগুলি নামমাত্র সেবা দিয়ে গলা কাটা বিল আদায় করছে। বিএমএ সহ সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থিত চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠনগুলির দৌরাত্ম্য, একচেটিয়া প্রভাবের কারণে এখানে রোগীদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো প্রকার নজরদারি করার সাহস পর্যন্ত নেই। ফলে মানুষ অসহায় হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য ভিড় জমায়। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেক্টরে এ ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য বেসরকারী ক্লিনিক, প্যাথলজিকাল ল্যাবসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠানে কঠোর নজরদাবির দাবি রয়েছে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য সেক্টরে কমিশন প্রথা, উপহার প্রথা বাতিলসহ ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় কঠোর আইনী প্রতিকার এবং সিবিএ সংগঠনের মতো বিএমএর অযাচিত হস্তক্ষেপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দুই নারী চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে গতকাল ১৭ জুলাই ও আজ ১৭ জুলাই চিকিৎসকদের সব ধরনের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধ রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪
Leave a Reply