লাইফস্টাইল ডেস্ক
মুখে দুর্গন্ধের কারণে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। দিনে দুবার ব্রাশ করার পরও দুর্গন্ধ যেন থেকেই যায়। মুখ ঢেকে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। কারও সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে গেলে বিব্রত লাগে, হাসতেও পারেন না প্রাণ খুলে। আমাকে নিয়ে কে, কি ভাবছে? এসব চিন্তা করে, সবসময় মনে একটি চাপা ভয় যেন থেকেই যায়।
মুখে দুর্গন্ধ বা হ্যালিটোসিস মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হওয়ার কারণে হয়, যা গন্ধ করতে পারে এমন গ্যাস তৈরি করে। সাধারণত আমরা যে খাবার খাই তাতে ব্যাকটেরিয়া শর্করা এবং স্টার্চ ভেঙ্গে দিলে গন্ধ উৎপন্ন হয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি মাড়ির রোগ বা দাঁত ক্ষয়ের মতো গুরুতর দাঁতের সমস্যারও কারণ হতে পারে।
কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। জেনে নিন তেমনই ৭ উপায়-
লবঙ্গ: লবঙ্গ হলো আমাদের রান্নাঘরে থাকা সাধারণ উপাদান যা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং মাড়ি ফোলা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমায় এবং অন্যান্য দাঁতের সমস্যা যেমন রক্তপাত এবং দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি কমায়। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি কয়েক টুকরো লবঙ্গ মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
পানি: দিনে কম পানি পান করলেও মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। পানি মুখ থেকে ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সাহায্য করে এবং এটিকে রোধ করে। এটি আপনার শ্বাস সতেজ রাখতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনার নিঃশ্বাসে প্রচুর গন্ধ অনুভব করেন তবে দিনে প্রচুর পানি পান করুন। আপনার নিঃশ্বাসের গন্ধকে সতেজ করতে পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
দারুচিনি: মিষ্টি স্বাদের দারুচিনিও আপনাকে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে। লবঙ্গের মতো দারুচিনিতেও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে পারে। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য মুখে দারুচিনির একটি ছোট টুকরা রাখতে হবে এবং তারপরে আপনি এটি ফেলে দিতে পারেন। এতে মুখে সৃষ্ট দুর্গন্ধ দূর হবে।
লবণ-পানির গার্গল: হালকা গরম লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করলে তা মুখের খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং আপনার মুখের গন্ধকে সতেজ করে তুলতে পারে। লবণ-পানি মুখের মধ্যে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে দূরে করে। আপনাকে এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মেশাতে হবে এবং বাইরে যাওয়ার আগে এটি দিয়ে গার্গল করতে হবে।
মধু এবং দারুচিনি: মধু এবং দারুচিনি উভয়েরই শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে এবং মাড়িকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। দাঁত এবং মাড়িতে নিয়মিত মধু এবং দারুচিনির পেস্ট লাগালে দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং এমনকী নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের ঝুঁকি কমাতে পারে। উভয় উপাদানই একেবারে নিরাপদ এবং রান্নাঘরে সহজেই পাওয়া যাবে।
পুদিনাপাতা: একে প্রাকৃতিক মাউন্ট ফ্রেশনার বলা যেতে পারে। তাই মুখে গন্ধ হলে ২-৩টি পুদিনাপাতা নিয়ে চিবিয়ে ফেলুন।
নারিকেল তেল: এ তেলে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নিমিষে গন্ধ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। ফলে মুখের গন্ধ দূর হতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে এক চামুচ নারিকেল তেল মুখে নিয়ে ভালো করে কুলি করুন। কম করে ৫ মিনিট করতে হবে। তার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।
Leave a Reply