মো. শোয়াইব, হাটহাজারীঃ হাটহাজারীতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ সাতজন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ২জন জমজ শিশুসহ মোট তিনজন শিশু ছিলো। এ দুর্ঘটনায় বাপ্পা নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি মহাসড়কের মির্জাপুর ইউনিয়নস্থ চারিয়া ইজতেমা মাঠ সংলগ্ন সড়কে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সকলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাজির পাড়া সাতবাড়িয়া ধনী পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তবে বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে।
নিহতরা হলেন, ১.দ্বীপ (৪) ২.দিগন্ত (৪) (জমজ ভাই) ৩.বর্ষা দাশ( ১০) ৪.শ্রাবন্তী দাশ(১৭),উভয় পিতা নারায়ন দাশ ৫) রিতা দাশ(৩৫) স্বামী-নারায়ন দাশ, ৬. বিপ্লব দাশ (২২) পিতা সম্ভু দাশ ৭. চিনু বালা দাশ (৫০) স্বামী সচিন্দ্র দাশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যানুসারে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামমুখী খাগড়াছড়ি থেকে ‘পদক্ষেপ’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস (চট্টমেট্রো-ব-১১-১৮০৮) দ্রুত গতিতে চারিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশার (চট্টগ্রাম থ-১৩-০২১৮) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের ৫জন সহ মোট ৭জন মারা গেছেন। তবে এ ঘটনায় বাপ্পা নামের একজন ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহতরা চন্দনাইশ বাঁশবাড়িয়া থেকে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবার শাহনগর গ্রামের বণিক পাড়ায় পরিবারসহ বেড়াতে যাচ্ছিলো। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এসময় হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে একটি টিম, নাজিরহাট হাইওয়ে, উপজেলা প্রশাসন, র্যাবের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ফায়ার সার্ভিসের টিমসহ থানা পুলিশ মরদেহগুলি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই আক্ষেপ জানিয়েছেন, ‘মহাসড়কে ডিভাইডার-স্পীডব্রেকার ও গতি নির্দেশনা না থাকায় প্রতিনিয়ত এরকম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।’
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স এর স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে একটা টিম দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এখানে আসার পর সাতজনের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি। আমরা আমাদের কার্যক্রমে সবার লাশ উদ্ধার করে থানায় দিয়ে দিয়েছি।’
জানতে চাইলে নাজিরহাট হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আদিল মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনাটি খুব মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। নিহতদের পরিবার আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে বাসের চালক ও হেলপার পলাতক থাকার কারনে আটক করা হয়নি। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’