আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানে হিজাব না পরলে হতে পারে ১০ বছরের জেল। গতকাল এমনই এক বিতর্কিত বিল পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমতি পাওয়ার পর বিলটি আইনে পরিণত হবে। বিলটিতে বলা হয়েছে, ‘সঠিক পোশাক’ না পরলে ১০ বছরের জেল হতে পারে। বছরখানেক ইরানে আগে হিজাব না পরায় নৈতিকতা রক্ষা পুলিশের নিপীড়নে মৃত্যু হয় মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর। পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। নারীরা তাদের স্কার্ফ খুলে প্রতিবাদ জানায়। পরিস্থিতি সামালে আরও কঠোর হয় ইরান সরকার। শত শত মানুষ প্রাণ হারায়।
এই মৃত্যুর প্রতিবাদ হিসেবে ইরানে হিজাব পরিধানের সংখ্যা কমে গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে নৈতিকতা পুলিশ। ইরানে শরীয়াহ আইন অনুসরণ করা হয়। সেখানে বলা হয়, কিশোর বয়স থেকে অবশ্যই নারীকে হিজাব দিয়ে তার চুল ঢাকতে হবে এবং বড়, লম্বা ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। এই আইন না মানলে ১০ দিন থেকে ২ মাসের জেল কিংবা ৫ হাজার থেকে ৫ লাখ রিয়াল জরিমানা করা হতে পারে। বুধবার ইরানের পার্লামেন্টে হিজাব অ্যান্ড চ্যাসিটি বিল নামে এই বিলটির পক্ষে ভোট দেন ১৫২ জন। তারা বলছেন জনসমক্ষে সঠিক পোষাক না পরলে চতুর্থ মাত্রা শাস্তি হওয়া উচিত।
দেশটির পেনাল কোড অনুযায়ী চতুর্থ মাত্রার শাস্তি মানে হচ্ছে ৫ থেকে ১০ বছরের সাজা কিংবা ১৮ থেকে ৩৬ কোটি রিয়াল জরিমানা। শুধু জনসমক্ষেই নয়, কোনো নারী যদি গাড়ি চালায় কিংবা যাত্রী হিসেবেও থাকে, তাকেও অবশ্যই হিজাব পরতে হবে। যারা সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে ‘হিজাব নিয়ে মজা করে’ অথবা নগ্নতাকে প্রোমোট করে তাদেরও শাস্তির আওতায় আসতে হবে। বিলটি এখন দেশটির অভিভাবক পরিষদ বা গার্ডিয়ান কাউন্সিলে পাঠানো হবে। এই পরিষদে বিচারক ও ধর্মযাজকরা রয়েছেন। তাদের ভেটো ক্ষমতাও আছে।