আজ ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুরু হলো স্বাধীনতার মাস অগ্নিঝরা মার্চ


অনলাইন ডেস্ক

শুরু হলো স্বাধীনতার মাস অগ্নিঝরা মার্চ। ১৯৭১ সালে এ মাসেই শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালি জাতি হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে রণাঙ্গনে।

বাঙালির জীবনে নানা কারণে মার্চ আত্মিক শক্তির সঞ্চার করে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল—সে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলার সর্বত্র। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬-এর ছয় দফা এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন মোড়।

পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন ধরে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম চলতে থাকে। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের মার্চে এসে উপনীত হয়। গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলনরত বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে এ মাসেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গণহত্যা শুরু করে।

এর আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ। সারা দেশই তখন অগ্নিগর্ভ। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এদিন বেতার ভাষণে ৩ মার্চের গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন।

এ সময় তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান বনাম বিশ্ব একাদশের ক্রিকেট খেলা চলছিল। ইয়াহিয়া খানের ঐ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক খেলার মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসে জনতা। হাজারো মানুষ পল্টন-গুলিস্তানে বিক্ষোভ শুরু করে দেন। সেই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ নেয়। সেদিন মতিঝিল-দিলকুশা এলাকার পূর্বাণী হোটেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ক্ষুব্ধ ছাত্ররা সেখানে গিয়ে প্রথমবারের মতো স্লোগান দেন, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।

ছাত্ররা শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানান। বিক্ষোভ-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকাসহ গোটা দেশ। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাণী হোটেলেই শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাইরে চলছিল বিক্ষুব্ধ বাঙালির কঠোর কর্মসূচির দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান।

বৈঠক শেষে শেখ মুজিব ২ ও ৩ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানে সর্বাত্মক হরতালের ডাক এবং ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভার ঘোষণা দেন। এরপর ২ মার্চ প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একে একে পার হয় উত্তাল মার্চের ২৫টি দিন।

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর