আজ ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শতাধিক পরিবার ভয়াবহ পানি সংকটে,মগকক্রী ঝিড়ির পানি একমাত্র ভরসা


মো: সোহেল রানা,বান্দরবান প্রতিনিধি >>> বান্দরবান থানচি উপজেলার বিদ্যামনি পাড়া, যেখানে বসবাস করেন মারমা, ত্রিপুরা, খুমি, চাকমা ও বাঙালি পরিবারের সদস্যরা, তাদের জীবনে একটি চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুপেয় পানির অভাব।এখানে, সলিনা ত্রিপুরা, রেসমতি ত্রিপুরা ও গুগাতি ত্রিপুরা এই তিন গৃহিণী প্রতিদিন পানির জন্য প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে উঁচু পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে মগকক্রী ঝিড়ির শাখা, মরা ঝিড়ি থেকে পানি সংগ্রহ করেন।ঝিড়ির পাথরের গর্ত থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি সংগ্রহই একমাত্র ভরসা। এক কলসি পানি সংগ্রহ করতে তাদের ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় বের করতে হয়। শুধু সুপেয় পানি নয়, নিত্যব্যবহার্য পানি পাওয়াও তাদের জন্য এক চ্যালেঞ্জ। বিদ্যামনি পাড়া, যেখানে ৭০টি পরিবারের বসবাস, এটি একটি সম্প্রীতি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এখানে মারমা, ত্রিপুরা, খুমি, চাকমা ও বাঙালি পরিবারের সদস্যরা একত্রে বসবাস করছেন। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠছে।সলিনা, রেসমতি ও গুগাতি ত্রিপুরা জানান, তারা সকালবেলা পানি সংগ্রহ করতে পারেন না, কারণ অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। বিকালে, তাদের জুমের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে দেখেন রান্নার জন্য পানি নেই, ফলে আবার তাদের যেতে হয় পানি সংগ্রহ করতে। গুগাতি ত্রিপুরা জানান, ঝিড়ির ক্ষুদ্র একটি উৎস থেকে বাঁশের খোল বসিয়ে পানির ফোঁটা ফোঁটা সংগ্রহ করতে হয়। এক কলসি পানি পূর্ণ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়। এই পানি দিয়েই তাদের রান্না, গোসল এবং গৃহস্থালির সব কাজ করতে হয়।২০১৫ সালে একটি এনজিও সংস্থা গ্রামবাসীদের জন্য মগকক্রী ঝিড়ির শাখা থেকে গ্রাভিটি ফ্লো সিস্টেম (জিএফএস) পাইপের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় ব্যবস্থা স্থাপন করে। কিন্তু ২০২৩ সালে, মৌজা হেডম্যানের অনুমতিক্রমে কিছু গ্রামবাসী ওই স্থানে জুম চাষ শুরু করেন এবং গাছ কেটে পানির উৎসের ক্ষতি করে। এতে গ্রাভিটি ফ্লো সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায় এবং পানির অভাব ফিরে আসে।বিদ্যামনি পাড়ার প্রধান যাদুরাম ত্রিপুরা জানান, ২০২৩ সালে একটি এনজিও সংস্থা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে গভীর নলকূপ বসানোর জন্য শ্রমিক এসেছিল, কিন্তু কাজটির প্রায় অর্ধেক অংশ করার পর তারা কাজ বন্ধ করে চলে যায়।উপজেলার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা জানান, গ্রামবাসীরা যদি তাদের নিকট আবেদন জানায় এবং সরকারের রাজস্ব খাতে ১০ হাজার টাকা জমা দেয়, তবে গভীর নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।তবে তিনি বলেন, তিনি দুইটি উপজেলার দায়িত্বে আছেন এবং সব জায়গায় নজর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর