মোঃ রবিউল হোসেন খান>>> খুলনা ব্যুরো : রাস্ট্রায়ত্ত পাটকল রক্ষা খুলনা, যশোর আঞ্চলিক কমিটি উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসুচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে । আজ ১২ জানুয়ারী বিকাল ৪ টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসুচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নিকট পৃথক ভাবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের মাননীয় উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষন করে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বন্ধকৃত পাটকল উৎপাদন বন্ধের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে মিলের অভ্যন্তরে রাতের আধারে নদীর সাইডে ট্রলার ভিড়িয়ে মুল্যবান যন্ত্রাংশ, তামার রড,তামার তার,সচল মেচিন চুরি করে বিক্রি করা হয়।এ বিষয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ মিল কতৃপক্ষকে অভিযোগ জানালেও তারা বিষয়টি আমলে না নিয়ে চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত হয়ে মিলের মালামাল পাচার করতে থাাকে।পরবর্তীতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনগন হাতেনাতে ধরে ও তাদের বাধার মুখে চুরি বন্ধ হয়।সৈরাচার সরকারের শাসন আমলে ক্ষমতার দাপটে টেন্ডারের নামে মিলের অভ্যন্তরে মুল্যবান মালামাল লুটপাট শুরু হয়।যা এখনও কতিপয় বিজেএমসি অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় চলমান। টেন্ডারের মাধ্যমে পাটকল গুলো রাস্ট্র,জনগন,শ্রমিকের সার্থে অবিলম্বে টেন্ডারের নামে চুরি লুটপাটের মহোৎসব বন্ধের দাবি জানান।শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দাবি রাস্ট্রিয় পাটকল রাস্ট্রিয় ব্যাবস্থাপনায় চালু করতে হবে,লিজ প্রথা বাতিল করে শ্রমিকদের সকল বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। রাস্ট্রিয় পাটকল ধংসকারী সৈরাচার সরকারের সাবেক পাটমন্ত্রী,শ্রমপ্রতি মন্ত্রী ও বর্তমান পাট সচিব আব্দুর রউফ সহ প্রতিটি মিলের প্রকপ্ল প্রধানকে আইনের আওতায় এনে দুর্নীতির বিচার করতে হবে।শ্রমিকদের ইনক্রিমেন্টের টাকা, ২ টি বোনাস,দুদিনের মজুরি,বৈশাখী উৎসবের টাকা খালিশপুর, দৌলতপুর জুট মিল সহ ৫ টি মিলের ২০১৫ সালের ঘোষিত মজুরী কমিশনের বর্ধিত টাকা পরিশোধ করতে হবে। মিল অভ্যন্তর হতে উচ্ছেদকৃত শ্রমিকদের মিলে বসবাসের ব্যাবস্থা করতে হবে।বিভিন্ন আদালতে মিল কতৃক দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করে শ্রমিকদের অযথা হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নতুন করে কোন মামলা দায়ের করে নিরিহ শ্রমিকদের হয়রানি করা যাবে না।মামলা নিস্পত্তিকৃত শ্রমিকদের অবিলম্বে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে।উল্লেখ্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন ( বিজেএমসি) গত ৩০/০৬/২০২০ তারিখ সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তৎকালীন সৈরাচার সরকার করোনা কালীন সময়ে রাতের আধারে ২৫ টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।এতে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ে। বর্তমানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।কেউবা চালাচ্ছেন রিক্সা,ভ্যান,অটো আবার কেউ দিন মুজুরের কাজ সহ ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন। এসব পরিবারের ছেলে মেয়েরা অনেকেই আবার অন্ধকার জগতে জরিয়ে পড়েছেন। অথচ সৈরাচার সরকারের লালিত বিজেএমসির পাটকল গুলোতে গত ৪ বছর যাবৎ প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীরা বসে, বসে বেতন, ভাতা সহ বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন।এতে সরকারকে যেমন একটি মোটা অংকের টাকা প্রতি মাসে লোকসান গুনতে হচ্ছে সাথে সাথে অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের লুটপাটের রাজত্ব বেড়েই চলেছে বলে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন। এর আগে খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে স্মারকলিপি প্রদানের পুর্বে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করে।এ সময় তারা অভিযোগ করে, প্রতিবেশী রাস্ট্রকে খুশি করবার জন্য রাতের আধারে বিনা নোটিশে পাটকল গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি ছিল সৈরাচার সরকারের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পাটকল রক্ষা খুলনা, যশোর আঞ্চলিক কমিটি আহবায়ক ও জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক মো : শমসের আলম, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মো: গিয়াস উদ্দিন,মো: শামিম আহম্মেদ,ওলিয়ার রহমান,শরিফুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, খুলনা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলোনের সম্মুখ সারির সমন্বয়কারী মো: আলামিন শেখ,শরব মহাসান মাহিন,মো: মেহেদি হাসান,মো: শামস,মো: লিটন,মো: আনিস,মো: আলামিন হোসেন,মো: সাগর প্রমুখ।
Leave a Reply