মোঃইনামুল হক, (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের বদরগঞ্জে প্রকাশ্যে চুলের মুঠি ধরে এক নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে লাঠিপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। স্হানীয় সূত্রে জানাগেছে, মারধরে বাধা দেওয়ায় ওই নারীর বৃদ্ধ মা
কেও মারপিট করা হয়েছে।মারধর শিকার ঐ নারী সাংবাদিক রিয়াদ ইসলামের মা।রিয়াদ ইবিনিউজ ২৪অনলাইন সংস্করণ রংপুর জেলা কর্মরত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী করা মামলায় পুলিশ গতকাল রোববার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন ওই নারীর প্রতিবেশী বদরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৫০) ও গোলজার হোসেন (৬০)। মামলায় ওই দুজনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারীর চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় তাঁকে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছিলেন। পেটানোর দৃশ্য দেখে আশপাশে থাকা শিশুদের ভয়ে দৌড়ে চলে যেতে দেখা যায়।এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় গত শনিবার সকালে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। কিন্তু পুলিশ গতকাল বিকেল পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে লাঠিপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ রাতেই মামলাটি নেয় ও দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওই নারীর স্বামী অনেক বছর আগে মারা গেছেন। বৃদ্ধ মা ও ছেলেকে নিয়ে তিনি থাকেন। গত শুক্রবার দুপুরের দিকে বাড়ির পাশে ওই নারীর জমিতে কেটে রাখা ধান গরু ঢুকে নষ্ট করে। একে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী গোলজার হোসেনের সঙ্গে ওই নারীর ঝগড়া হয়। পরে ওই দিন বিকেলে গোলজার হোসেন কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাঁকে লাঞ্ছিত ও লাঠিপেটা করেন। বাধা দেওয়ায় ওই নারীর বৃদ্ধ মাকেও পেটান আসামিরা। পরে অন্য প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মাধাইখামার গ্রামে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাক্তি বলেন,এভাবে একজন নারীকে দিনের বেলায় টেনে হেচড়ে পেটানো ঘটনাটি কাপুরুষতা বর্বচিত।এদের সবার কঠিন শাস্তি দাবি জানাই।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক শাকির মোবাশ্বির জানান, ঐ নারীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। এতে ভুক্তভোগী নারীর মায়ের মাথা ফেটে গেছে। আর ভুক্তভোগী নারীর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম হয়েছে। তাঁরা শঙ্কামুক্ত, তবে তাঁদের সুস্থ হতে খানিকটা সময় লাগবে।
বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এছাহাক আলী বলেন,এঘটনায় মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামি পলাতক থাকায় আটক সম্ভব হয়নি।তবে তাদের ধরতে জোরতৎপরতা চলছে।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।পরে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পরে গতকাল থানায় মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। রাতেই ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরের দিকে তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার জোর তৎপর চলছে।
Leave a Reply