অনলাইন ডেস্ক
মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আহত শিক্ষার্থীকে ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি করছেন দলটির নেতারা। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১১টার দিকে মূল ফটক আটকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম নুরুল করিম সাদ। তিনি ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী।
সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের সামনে থেকে মুখ বেঁধে ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে খুঁজতে শুরু করে। পরে জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে নির্জন এলাকায় তাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালে নিয়ে যাই। পরে এক্স-রে করার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিনসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা প্রক্টরিয়াল বডিকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিতে বললে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে ফটক খোলেন।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নুরুল করিম সাদ চবি ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ বিজয়ের কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আগে রাজনৈতিক পরিচয়ে চবির সোহরাওয়ার্দী হলে থাকলেও বর্তমানে তিনি শহীদ আব্দুর রব হলে বৈধ আসন নিয়ে থাকেন। এদিকে ছাত্রদল সাদ’কে তাদের কর্মী বলে দাবি করলেও শিক্ষার্থী হিসেবেই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান দলটির নেতারা।
চবি মেডিক্যালে দায়িত্বরত চিকিৎসক কে এম আতাউল গনি বলেন, ওই ছাত্রকে রাত ১০টার দিকে আনা হয়েছিলো। ডান পায়ে এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। মাথা বা বুকে কোনো আঘাত ছিলো না, তিনি নিজেই বলেছিলেন। পায়ের এক্স-রে করার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন বলেন, সাদ ছাত্রদলের কর্মী হলেও তার বড় পরিচয় সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে তুলে নিয়ে মারধর করাটা অন্যায়। সে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই ছিলো। সেটার প্রমাণও আমাদের কাছে আছে। সিসি ক্যামেরা দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি আমরা।
চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রাত ২টা পর্যন্ত আহত শিক্ষার্থীর সাথে ছিলাম। চিকিৎসা শেষে তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছি। সে বাড়ি চলে গেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।