নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাবন্দি সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনকে মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে নগরের বাকলিয়া থানায় মামলাটি করেন নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ওসি বলেন, ‘মামলার আসামিদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা কে কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয় জানার চেষ্টা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মামলার এজাহারে যা উল্লেখ আছে-
সারোয়ার হোসেন বাবলার গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন নিহত মানিক। আর সারোয়ারের ব্যক্তিগত কাজকর্ম করতেন নিহত আবদুল্লাহ। গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে প্রাভেটকারে করে নতুন ব্রিজ এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন মানিক, সারোয়ার, আবদুল্লাহ, রবিন, হৃদয় ও ইমন।
নতুন ব্রিজ থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বহদ্দারহাটের দিকে রওয়ানা হলে রাত ২টার দিকে রাজাখালী ব্রিজের ওপর পৌঁছামাত্র ৬-৭টি মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। গুলিতে গাড়ির পেছনের গ্লাস ছিদ্র হয়ে যায়। তখন মানিক বহদ্দারহাটের দিকে না গিয়ে বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে চকবাজারের দিকে যায়।
সোয়া ২টার দিকে চকবাজার থানার নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে মানিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ি থামায়। গাড়ির পেছনে থাকা হাছান, ইমন, বোরহান, খোরশেদ ও রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে মানিক ও আবদুল্লাহ জখম হয়। গাড়িতে থাকা সারোয়ার এবং ইমন কৌশলে নেমে যায়৷ এরপর গুলি ছুঁড়তে থাকা আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মানিক ও আবদুল্লাহকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী তামান্নার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা সারোয়ার হোসেন বাবলা ও তার ছেলেসহ অন্যদের হত্যা করার জন্য নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে প্রাইভেটকারটির পিছু নেন।
ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফেরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিন জানিয়েছিলেন, সাজ্জাদের সঙ্গে সারোয়ারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্প্রতি সাজ্জাদের গ্রেপ্তার এবং রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা বেড়েছে। তাই সাজ্জাদের লোকজন সারোয়ারকে খুন করতে এ হামলা চালাতে পারে।
নিহত আবদুল্লাহর মা রাশেদা বেগম জানিয়েছিলেন, মাস দুয়েক আগে ছোট সাজ্জাদ রাউজানে তার ছেলের পায়ে গুলি করেছিল। তাই দুই মাস সে ঘর থেকে বের হতে পারেনি। ঈদের মার্কেট করার জন্য দুই মাস পর ওইদিন বের হয়েছিলেন আবদুল্লাহ।
Leave a Reply