এইচ.এম.সাইফুদ্দীন, ফটিকছড়ি : শিক্ষার্থীদের হাতে বই-খাতা ও কলম, কারো মাথায় ফুলের মুকুট, রয়েছে ফুলের মালা, বাসন্তী রঙের পোষাকে এসেছেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তরুণীদের হাতে রিনিঝিনি শব্দ করে বাজছে কাচের চুড়ি। তরুণদের গায়ে দারুণ বাহারী পাঞ্জাবি। নিজেরা ছাড়াও আবার যুগল বেঁধেই এসেছেন অনেকে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিনভর নানা রঙ্গে-পোষাকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সরকারি কলেজে মানুষের ঢল নেমেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নানা বয়সের সবাই মিলেমিশে মেতে উঠেছে আনন্দে। দারুণ একাকার হয়ে।
কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী আয়োজন করে উৎসবের। কলেজ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক উৎসবের উদ্বোধন করেন। একাদশ থেকে শুরু করে প্রত্যেক বর্ষের শিক্ষার্থীরা করেছেন বিভিন্ন পিঠার ১১টি স্টল। সবকটি স্টল তদারকির দায়িত্বে ছিলেন কলেজের শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়া ভ্রাম্যমান হকারও রকামারী পন্য সাজান। দর্শনার্থীরাও এসেছিলেন সেখানে। তবে অনেককে অকারণে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়। অনেকে স্বাদের পিঠা খেয়ে সময় কাটিয়েছেন। উৎসব ঘুরে দেখেন অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক ও উপাধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান, শিক্ষক এন এম রহমত উল্লাহ, মো. শামীম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও মো. জাহিদুল ইসলাম।
কলেজ কর্তৃপক্ষের মতে, প্রতি বছরের মতো বসন্তের এই দিনে তারা পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন। উন্মুক্ত এ আয়োজনে সকলে মেতে উঠে এই উৎসবে অংশ নিতে। উৎসব নির্বিগ্ন করতে সবপ্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। কলেজের শিক্ষার্থী মো. রুবেল সাজ্জাদ বলেন, ‘কতদিন ধরে কলেজে আছি। তেমন উৎসব করতে পারিনি। এ রকম উৎসব আমাদের অনেক আনন্দ দিয়েছে। অনেক মজা করেছি, খেয়েছি। ভালো লেগেছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, বসন্তের পিঠা উৎসবে বহুরকমের পিঠা-পুলি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পাটি সাপটা, পুলি পিঠা, ভাপা পিটা, নকশি পিঠা, মাংস পুলি, দুধ পুলি, নারকেল পুলি, দুধ চিতই, ঝাল পোয়া, সেমাই পিঠা, ডিম পিঠা, মাংস-ঝাল পিঠা, জামাই পিঠাসহ নানা নাম ও স্বাদের বাহারি পিঠা। পিঠার বাহারী সুভাস কলেজ প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া স্টলগুলোতে নানা রকম রকমারী পণ্যও দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের হলুদ-লাল-বেগুনি রঙে সেজেছে উৎসব প্রাঙ্গণ।
পিঠা নিয়ে আসা দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী কাকন সরোয়ার বলেন, ‘ব্যাপক সাঁড়া পেয়েছি। সহপাঠী ও দর্শনার্থীরা দেখার পাশাপাশি পিঠাসহ কিছু শরবত ও রকমারী পন্যও কিনেছেন।’
‘পিঠার আসর’ পিঠা ঘরের তত্বাবধায়ক অনামিকা সায়মা বলেন, ‘উৎসবে এত মানুষের আগমন দারুণ লেগেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী মানুষ যেমন এসেছেন তেমনি কিনেছেনও সবাই। যুগলের পাশাপাশি কেউ কেউ পরিবার নিয়েও এসেছেন।’
ফটিকছড়ি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে এ আয়োজন। তিনি বলেন, এসব উৎসব দীর্ঘদিন না হওয়ায় এবার সবার আগ্রহ কিছুটা বেশি। আমরা নানা ধরনের উৎসব অব্যাহত রাখতে চাই।’
Leave a Reply