নিজস্ব প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ভূমি অফিসের নাইট গার্ড শহীদুল ইসলাম (শহীদ) ও নাজির রাসেল দত্তের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও ও ভিডিও ফুটেজে ঘুষ লেনদেনসহ একাদিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অডিও ও ভিডিওতে তাদের ঘুষ গ্রহণের কথোপকথন স্পষ্টভাবে শোনা গেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। নাইট গার্ড শহীদুল ইসলাম, যিনি ভূমি অফিসের শুধুমাত্র রাতের দায়িত্বে থাকার কথা, দিনের বেলায় ভূমি অফিসের ফাইল ফটোকপি করে বিক্রি ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে তাকে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় দর-কষাকষি করতে শোনা যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহীদ শুধুমাত্র রাতে অফিসে পাহাড়া দেওয়ার দায়িত্বে থাকলেও দিনের বেলায় অফিসের টেবিল-চেয়ার দখল করে ঘুষ লেনদেনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তার ক্ষমতার উৎস নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছে।
নাজির রাসেল দত্তের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি ঘুষ গ্রহণ এবং শহীদের দুর্নীতিতে সহযোগিতা করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে নাইট গার্ড শহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও, সেটি বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে নাজির রাসেল দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি জানান, আমার কোন বক্তব্য নেই, আপনারা যা পারেন লিখে দেন।
এছাড়া, পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) নুর পেয়ারা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি, তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পেকুয়ার জনগণ এই দুই কর্মচারীর দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, “একজন নাইট গার্ড এবং নাজির মিলে পুরো ভূমি অফিসকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। আমরা এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” অভিযোগকারীদের মতে, এতগুলো গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে তারা কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পেকুয়া ভূমি অফিসে দুর্নীতি রোধে অবিলম্বে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি অফিসের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি স্থাপন, নিয়মিত অডিট এবং অভিযোগকারীদের বক্তব্য শোনা উচিত। পেকুয়ার জনগণ মনে করছেন, যদি এই দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অফিসে দুর্নীতি আরও গভীর হবে এবং সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার অধিকার বাধাগ্রস্ত হবে।
Leave a Reply