নতুন রূপে সেজেছে পারকি সমুদ্র সৈকতের ২০০ মিটার দক্ষিণে পরুয়াপাড়া এলাকার বেড়িবাঁধের উপর দৃষ্টিনন্দন পর্যটক ছাউনি।এখন দিনে সৈকতে সৌন্দর্য আর সন্ধ্যা নামলেই বর্ণিল আলোকসজ্জায় নৈসর্গিক হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
জানা গেছে,কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল ও দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর এক সাথে দেখতে পর্যটকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় পারকি সৈকত। এবার পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে সৈকত পাড়ে নির্মাণ করেছে দৃষ্টিনন্দন পর্যটক ছাউনি। এ ছাউনি নির্মাণ করেন স্থানীয় ফাহাদ বিন ছালেহ নামের এক তরুণ সমাজ সেবক। একই সাথে পাশেই পর্যটকদের জন্য একটি নামাজের স্থান নির্মাণ করা হয়। সন্ধ্যা হলেই এসব নান্দনিক ছাউনির আলোকসজ্জার কারনে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠে পুরো এলাকা। এতে করে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ৫০০ কোটি ব্যয়ে ২০১৮ সাল থেকে কয়েকধাপে আনোয়ারার পারকি থেকে গহিরা, পূর্বগহিরা, সরেঙ্গা, জুঁইদন্ডী,বারখাইন ও হাইলধর এলাকার সাগর ও নদী উপকূলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। বেড়িবাঁধের পরুয়াপাড়া অংশ থেকে গহিরা বারআউলিয়া, পূর্বগহিরাসহ বিভিন্ন অংশে পাথর বসালে কয়েক কিলোমিটার এলাকা পর্যটন এলাকায় রূপ নেয়। দক্ষিণ গহিরা শঙ্খের মোহনায় গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক প্যারাবন। এসব এলাকায় পর্যটকবাড়ার সাথে সাথে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। পারকিতে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে পর্যটন কর্পোরেশন। পারকি থেকে গহিরা বারআউলিয়া ও পূর্বগহিরা প্যারাবন পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যটক এলাকা হিসেবে গড়ে তোলতে কাজ করছে পর্যটন কর্পোরেশন।
[caption id="attachment_37480" align="aligncenter" width="635"] সংগৃহীত[/caption]
এদিকে বেড়িবাঁধের পরুয়াপাড়া অংশে দৃষ্টিনন্দন পর্যটক ছাউনি দেখতে প্রতিদিন শতশত পর্যটকের ভিড় জমে। এসময় পর্যটকরা ছাউনিতে বসেই সাগরের ঢেউ ও সারিসারি জাহাজের সৌন্দর্য উপভোগ করে। অনেকেই পরিবার নিয়ে চলে আসে এখানে। এই নান্দনিক পর্যটক ছাউনিতে সন্ধ্যার পূর্বে সূর্যাস্থ দেখতে ও ছবি তোলতে মানুষ ভিড় করে।
অন্যদিকে পর্যটক স্পটের পাশাপাশি সাগর ঘেঁষে নির্মিত বেড়িবাঁধের সৌন্দর্য বেড় গেছে। বেড়িবাঁধে দাড়িয়ে উপভোগ করা যাবে সাগরের গর্জন, স্নিগ্ধ বাতাস ও অপরুপ দৃশ্য। এতে রক্ষাও হবে বেড়িবাঁধ।
ঘুরতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাইমন বলেন, বন্ধুদের নিয়ে টানেল ও পারকিতে ঘুরতে এসে এদিকে চলে আসলাম। কোলাহলমুক্ত এ সাগর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন এসব পর্যটক ছ্উানি সবাইকে আকৃষ্ট করছে। এখানে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুইধরনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সন্ধ্যার পরে নির্মিত বেড়িবাঁধে নান্দনিক আলোকসজ্জা এখানে সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সাগর পাড়ে পর্যটক বাড়লে পর্যটকরা যেন নামাজ আদায় করতে পারে সেই জন্য বেড়িবাঁধের উপর নামাজের স্থান নির্মাণ করে দিয়েছি।
পর্যটক ছাউনি নির্মাণকারী তরুণ সমাজসেবক ফাহাদ বিন ছালেহ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাগর ও সৈকত ঘিরে বিভিন্ন নান্দানিক হোটেল ও পর্যটক বিশ্রামাঘার গড়েউঠে। এরই ধারাবাহিকতায় আমি পর্যটকদের জন্য এখানে সম্পূর্ণ অস্থায়ী পর্যটক ছাউনি নির্মাণ করেছি। প্রতিদিন পর্যটকরা এখানে ভিড় জমায়, এতে আমার বেশ ভাল লাগে।
আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. সোহাইল সালেহ বলেন, কক্সবাজারের আদলে মীরসরাই থেকে পতেঙ্গা, আনোয়ারা ও বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ এখন সময়ের দাবী। পারকি থেকে গহিরা পর্যন্ত এমনিতেই পর্যটন নগরীতে রূপ নিয়েছে। এসব এলাকায় একাধিক লোক ব্যক্তিগত উদ্যোগে পর্যটন স্পর্ট গড়ে তোলেছে। পরুয়াপাড়া সাগর পাড়ের বেড়িবাঁধে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন পর্যটক ছাউনি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে। এ ছাউনি সাগরের দৃশ্য ও বেড়িবাঁধের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি বেড়িবাঁধ রক্ষা করবে।