এখনো অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার। চাল-ডাল ও তেল থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের বাজারই ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে পাইকারিতে ভোজ্যতেলের বাজার বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সাম্প্রতিক সময়ে ভোগ্যপণ্যের বাজার না বাড়লেও দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের মূল্য বেড়েছে। ফলে বেড়েছে পণ্যের আমদানি ব্যয়। এছাড়া ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে।
গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার। সয়াবিন মণ প্রতি ২৫০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫৫০ টাকায়। এছাড়া পাম তেলের দাম ১৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৪০০ টাকায়। এছাড়া চীনা রসূন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা এবং চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। ডাল জাতীয় সব ধরনের পণ্যের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে মুগ ডাল ৭৭ টাকা, মশুর ডাল ১১৫ টাকা, মটর ডাল ৪৫ টাকা, চনার ডাল ৬৪ টাকা, খেসারী ডাল ৫৭ টাকা এবং ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। অপরদিকে বোতলজাত রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের লিটার ১৬০ টাকা, ২ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৩১৫ টাকা, ৩ লিটার ৪৭০ টাকা এবং ৫ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়।
স্থিতিশীল রয়েছে চিনির বাজার। বর্তমানে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম বৃৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই। ভোগ্যপণ্যের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে। আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে ভোগ্যপণ্যের বাজার উঠা-নামা করছে। যার ফলে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে এরমধ্যে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস.এম নাজের হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। সরকারের কোনো সংস্থা অভিযান চালাতে গেলেও তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। কোনো পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১ ডলার বাড়লেও সাথে সাথে তারা দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ যেসব পণ্যের দাম তারা বাড়িয়ে দেন, সেগুলো কিন্তু আগে আমদানি করা। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের বুকিং রেট কমে গেলে তখন কিন্তু তারা পাইকারি বাজারে দাম কমিয়ে দেয় না। অন্যদিকে যাদের বাজার মনিটরিং করার কথা, তারা সেভাবে মাঠে নেই। এতে কিন্তু ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা সুবিধাটা নিয়ে থাকে।