আজ ১৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চন্দনাইশের শুচিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯১ ব্যাচের মিলনমেলা সম্পন্ন


সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল:

শুচিয়া রামকৃষ্ণ স্কুলের দীর্ঘ একটা ইতিহাস রয়েছে, তা আমি এ এলাকায় আসার পর বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। এই স্কুলের বহু ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন সময়য়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধমে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। সেই সময়ের ’৯১ এর প্রাক্তন শিক্ষক ও মরণোত্তর সেই সময়ের শিক্ষক ও বর্তমান স্কুলের শিক্ষকদের যে সম্মান দিয়েছে, তা আমাকে অভিভূত করেছে। গত শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী নানান আয়োজনের মধ্যদিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করে স্কুলের ৯১ ব্যাচ। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিব হোসেন এসব কথা বলেন।
ইউএনও বলেন, তখনকার শিক্ষকরা কঠোর শাসনের মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন, স্নেহও করতেন। তাই আজ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে পিতৃতুল্য শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি। এটা আমার জন্য সম্মানের, সৌভাগ্যের। সময় পাল্টেছে, ছাত্র-শিক্ষকদের আচরণও পাল্টেছে। তখনকার শিক্ষা ও আজকের শিক্ষার মধ্যে তফাও অনেক।

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সাবেক উপ-পরিচালক দেবব্রত দাশ। সভাপতিত্ব করেন ’৯১ ব্যাচ এর সাবেক ছাত্র মো. আহছান উদ্দীন চৌধুরী। যুগ্ম সদস্য সচিব রাজেশ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব সুজন দেব। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দিলীপ ভট্টাচার্য্য, তৃষিত চৌধুরী, কিশোর চৌধুরী, প্রভাকর বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টায় শেষ হয়। দীর্ঘ ৩৩ বছর পরে ’৯১ ব্যাচের বন্ধুরা একত্রিত হওয়ায় এক উৎসবমুখর ও আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দুই যুগেরও অধিক সময় পর বন্ধুদের পেয়ে প্রাণের উচ্ছাসে মেতে ওঠে সবাই। ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেউ কেউ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ যেন ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।

এর আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্যদিয়ে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। প্রয়াত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ ও ’৯১ বন্ধুদের স্মরণ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর প্রধান অতিথি মো. রাজিব হোসেনের হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন সাবেক প্রধান শিক্ষক করুণাময় দাশ ও রতন চক্রবর্তী। এছাড়া বর্তমান প্রধান শিক্ষক টিক্লু দাশ গুপ্ত, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক সবিতা সিকদার, দিবাকর বড়ুয়া ও সলিল চক্রবর্তীকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এছাড়া মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয় সাবেক প্রধান শিক্ষক দিলীপ কান্তি মজুমদার, সিনিয়র শিক্ষক সুকুমার বড়ুয়া, শান্তিপদ দাশ, অজিত কুমার বড়ুয়া, তপন কান্তি চৌধুরী, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রত্না প্রভা বড়ুয়াকে। পরে বর্তমান স্কুলের সকল শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। বন্ধুদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গৌতম ভট্টচার্য্য, নেপাল শীল, লিপি দেব, সিরাজুল হক, বিজন দে, ত্রিদিব দেব, করবী দাশ, প্রবীর চৌধুরী, লিটন পাল, সজল ভট্টাচার্য্য, সমর ভট্টাচার্য্য, বীথি বড়ুয়া, শম্পা দাশ, নূপুর বড়ুয়া, উত্তম চৌধুরী, দিপক হোড়, শিমলা বিশ্বাস, ইতি তালুকদার, ঝর্ণা দেব, আলমগীর আলম, ভবতোষ চৌধুরী, অনুপ বড়ুয়া, মিল্টন চৌধুরী, পূর্ণিমা আচার্য্য, প্রণতি চৌধুরী, শিব নারায়ণ চক্রবর্তী, সুবল দে, মহিউদ্দীন চৌধুরী, দিলীপ হোড়, তরুণ চৌধুরী, চম্পা দেব, মিন্টু আচার্য্য, রাম প্রসাদ দেব, প্রিয়তোষ বড়ুয়া, জিতেন বিশ্বাস, পুষ্পেন বড়ুয়া, নিতিশ বড়ুয়া, দয়াল দাশ, পূর্নিমা সামন্ত, সুবল দে, ভবতোষ চৌধুরী ,প্রিয়তোষ বড়ুয়া, শিল্পী ভট্টাচার্য্য।

আয়োজক কমিটির সদস্যরা বলেন, আজ এইদিনে আমরা মিলিত হয়েছি। অনেককে দেখে অবাক হয়ে গেলাম, তবে অনেকেই আবার নেই আমাদের মাঝে। অনুষ্ঠানে সেই শৈশবের কথা ভাগাভাগি করে নেওয়া, সারাদিন হৈ হুল্লড় করা, একে অপরের সঙ্গে নতুন করে পরিচিত হওয়া—এই আর কি। বন্ধুদের নিয়ে ফটোসেশন, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ এবং র্যা ফেল ড্রয়ের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর