নিউজ ডেক্স>>>সংকটের মধ্যেও চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধীরে ধীরে পৌঁছাতে শুরু করেছে আরো পাঠ্যবই।প্রাথমিকের ৫০ শতাংশের বেশি বই এসে পৌঁছেছে।যার অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের হাতে চলে গেছে। অপরদিকে মাধ্যমিকের ২৫ লাখের বেশি বই চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে পৌঁছেছে।এছাড়া এবতেদায়ি এবং দাখিল পর্যায়ের অধিকাংশ বই চলে এসেছে।প্রাথমিকের বাকি বই ২০ তারিখের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মাধ্যমিকের বাকি বইও জানুয়ারির মধ্যে চলে আসবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।তবে সব বই শিক্ষার্থীরা হাতে পেতে ফেব্রুয়ারির শেষ গড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।এদিকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে পাঠ্যবই পাবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঠ্যবইয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।পরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।শফিকুল আলম বলেন,উপদেষ্টা পরিষদে বলা হয়েছে,পাঠ্যপুস্তক আগামী মাসের মধ্যে সবাই হাতে পাবে।আগের সরকার পাঠ্যপুস্তক উৎসব করত এক দিনের জন্য।দেখাত যে পাঠ্যপুস্তক সবাই ১ জানুয়ারি পাচ্ছে।কিন্তু যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, ২০১০ সালের পর বেশির ভাগ সময় সব বই পুরোপুরি বিতরণ হতে হতে মার্চ এবং কোনো কোনো বছর জুলাই মাসও হয়েছে।তিনি জানান,২০২২ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের সর্বশেষ তারিখ ছিল ২৪ মার্চ,২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ১৭ মার্চ এবং ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ২৭ ফেব্রুয়ারি।অপরদিকে গতকাল শুক্রবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সাংবাদিকদের জানান, সারা দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই এখনও সম্পূর্ণভাবে বিতরণ সম্ভব হয়নি। জানুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীর কাছে শতভাগ বই পৌঁছে দেওয়া হবে। বিলম্বের কারণ সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, বইগুলোর মান উন্নয়নের জন্য পরিমার্জনের কাজ করতে গিয়ে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে ইতোমধ্যে নতুন পাঠ্যবই লেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে আগামী বছর প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবে।সূত্রে জানা গেছে, এবার চট্টগ্রামে প্রাথমিকে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৪০ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৪টি। চট্টগ্রামে মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি মিলে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৩টি। এর মধ্যে বছরের প্রথম দিনই প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির সব বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির বই এরই মধ্যে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও শীঘ্রই বই পাবে।চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান আজাদীকে বলেন, প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়েছে। চতুথ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শুধু মৌলিক বইগুলো পেয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনো বই পায়নি। আশা করছি, ২০ জানুয়ারির মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে যাবে। চট্টগ্রামে প্রাথমিকের ৫০ শতাংশের বেশি বই এসেছে বলে জানান তিনি।চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, আমাদের চাহিদার বিপরীতে ২৫ লাখের বেশি বই চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। নবম–দশমের মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার কিছু বই এসেছে। অন্য শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই এসেছে। কয়েকদিনে অনেক বই এসেছে। আশা করি শীঘ্রই সব বই এসে পৌঁছাবে। ইংরেজি মাধ্যমের কোনো বই এখনো আসেনি। এছাড়া ইবতেদায়ি ও দাখিলের অনেক বই এসেছে।চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো স্কুলে চাহিদার অর্ধেক আবার কোনো স্কুলে চাহিদার ২০ শতাংশ এসেছে বই। যে পরিমাণ বই এসেছে সেগুলো দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন কর্র্তৃপক্ষ।