দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই)’র উদ্যোগে চট্টগ্রামস্থ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থা এবং ব্যবসায়ী সংগঠন ও এসোসিয়েশনের সাথে মতবিনিময় সভা ২১ নভেম্বর দুপুরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তুরস্কের অনারারি কনসাল জেনারেল সালাহউদ্দীন কাসেম খান, চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, কাস্টম হাউস’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন’র সভাপতি সৈয়দ মোঃ আরিফ, কনফিডেন্স সিমেন্ট’র এমডি জহির উদ্দিন আহমেদ, এমএসটি ইন্টারন্যাশনাল লিঃ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস, এম, সাইফুল আলম, বিজিএপিএমইএ’র পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন’র সভাপতি মাহবুব রানা, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এন্ড বিজনেসেস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’র এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী কামরুল হুদা, গ্লোবাল সুপার স্টার প্রাঃ লিঃ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরামুল করিম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী, উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) গোলাম মোঃ সারওয়ারুল ইসলাম, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন’র ১ম যুগ্ম সচিব মোঃ গোলাম রাব্বানি (রিগান) ও কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল হক খান স্বপন।
অন্যান্যদের মধ্যে কেজিডিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ সালাহউদ্দিন, বিডা’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেক্রেটারী রবীন্দ্র চাকমা, বেপজার নির্বাহী পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান ও মোঃ আবদুস সোবহান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র পরিচালক শারমিন আক্তার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এন্ড ফার্মস’র ডেপুটি রেজিস্টার মোঃ রকিবুল ইসলাম, ফিলিপাইনের অনারারি কনসাল এম. এ. আউয়াল, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালকবৃন্দ কামাল মোস্তফা চৌধুরী ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল (প্রাঃ) লিঃ পরিচালক’র মোঃ হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিজিএপিএমইএ-সহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন-গত ১৫-১৬ বছরে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো তিলে তিলে অক্ষম হয়ে গেছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হলে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এর জন্য ট্রেড এনগেজমেন্ট বাড়াতে হবে। সরকার বাণিজ্য গতিশীল করার লক্ষ্যে ব্যবসা সহজীকরণ এবং কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমানোর জন্য কাজ করছে। একই সাথে দ্রব্যমূল্যের বাজার সহনশীল এবং ক্রেতাদের নাগালে আনতে স্থানীয় পণ্যের ঘাটতি পূরণে নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি পণ্যের শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০ কোটি ডিম আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার ফলে কমতে শুরু করেছে ডিম, চিনি, ভোজ্যতেল সহ নিত্যপণ্যের দাম। বন্যাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়েছে তবে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন স্বাভাবিক হলে বাজার স্থিতিশীল হবে। এছাড়া আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে টিসিবিসহ প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে বলে তিনি জানান। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সহজলভ্য করতে জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে জাপানের সাথে অর্থনৈতিক অংশীদারী চুক্তি ইপিএ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনা চলছে বলে তিনি অবহিত করেন।
বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন বলেন-পূর্বে ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি ছিল মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ীর হাতে। ফলে তারা সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করতো। তাই সরকার আমদানির ক্ষেত্রে মনোপলি দূর করে যাতে সবাই আমদানি করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একই সাথে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুল্ক এবং এলসি মার্জিন কমিয়েছে সরকার।
চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন-সরকার আমাকে চট্টগ্রাম চেম্বারে একটি সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেছেন। সকলের সহযোগিতা নিয়ে সেই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে চাই।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন-চট্টগ্রামে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া ন্যায্যমূল্যে পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে কৃষকের হাট বা সুলভ মূল্যের বাজার চালু করতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
অন্যান্য বক্তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর বাজার মনিটরিং, ডিজিটাল সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা, বন্দর ও বন্দরের আওতাধীন বিভিন্ন আইসিডির চার্জ কমানো, চট্টগ্রামকে প্রকৃত অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকা নির্ভরতা কমানো এবং চিটাগাং চেম্বারের সুষ্ঠু ও অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবী জানান।
Leave a Reply