আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গ্রিন প্রোকিউরমেন্ট বাস্তবায়নে এসপিপি পলিসির বাস্তবায়ন প্রয়োজন


নিউজ ডেস্ক: বিল্ড, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি)-এর শি ট্রেডস ইনিশিয়েটিভ এবং বাংলাদেশ পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)-এর সহযোগিতায় সাসটেইনেবল পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট (এসপিপি) পলিসি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করতে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এই সমীক্ষার ফলাফল ২৪ এপ্রিল ঢাকার সিক্স সিজনস হোটেলে একটি পলিসি ডায়ালগে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এই সময়োপযোগী আলোচনায় বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান, নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী এবং পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট সংস্থাগুলোর প্রধান অংশীজন এসপিপি পলিসি বাস্তবায়নের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই ডায়ালগের মাধ্যমে মহিলা উদ্যোক্তাদের অন্তর্ভুক্তির উপর আলোকপাত করে বর্তমান প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে একটি মূল্যায়ন সমীক্ষার ফলাফলও শেয়ার করা হয়েছে, যা এসপিপি বাস্তবায়ন এবং মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন পদ্ধতির চলমান অবস্থা পর্যালোচনা করেছে।

বিল্ড সিইও ফেরদৌস আরা বেগম উদ্ভধনী বক্তব্য এবং সমীক্ষা রিপোর্ট উপস্থাপন করেন, যেখানে নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক গুরুত্ব এবং পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণের কিছু সুনির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে। সার্ভে ফলাফলে দেখা গেছে যে, জরিপকৃত নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯০% পাবলিক প্রোকিউরমেন্টে অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে ৬০% সহজ রিকুয়েস্ট ফর কোটেশন (আরএফকিউ) পদ্ধতি পছন্দ করে এবং মাত্র ৩০% ওপেন টেন্ডারিং মেথড (ওটিএম) ব্যবহার করে। এছাড়াও, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬০% এবং প্রোকিউরিং এনটিটিজের ১৫% এসপিপি পলিসি সম্পর্কে অজ্ঞাত। অন্যদিকে, এসপিপি গাইড সম্পর্কে মাত্র ৩০% প্রোকিউরিং এনটিটিজ সচেতন।

রিপোর্টে বিপিপিএ ও প্রোকিউরিং এনটিটিগুলোর সমন্বয়ে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে, যা একটি এসপিপি অ্যাকশন প্ল্যান এবং জেন্ডার-সংশ্লিষ্ট এম এন্ড ই ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে; নারী-মালিকানাধীন ব্যবসার সংজ্ঞা সুস্পষ্ট করা এবং ই-জিপি-এর মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক ডেটা সংগ্রহ; প্রোকিউরিং এনটিটিজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরাসরি যোগাযোগ ও কর্মশালার আয়োজন; বিপিপিএ থেকে প্রোকিউরিং এনটিটিজগুলোকে এসপিপি বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি সুপারিশও করা হয়।

বিপিপিএ-এর সিইও মির্জা আশফাকুর রহমান ইভেন্টে বক্তব্য রাখেন এবং জানান যে, পরিকল্পনা উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টিয়ারিং কমিটি এই বিষয়ে কাজ করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এসপিপি টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টান্ত।

আইটিসি সিনিয়র এডভাইজার টানভির আহমেদ ও সভায় বক্তব্য রাখেন। ইভেন্টে অনেক নারী উদ্যোক্তা, প্রোকিউরিং এনটিটি, আইএমইডি এবং উন্নয়ন সহযোগীরা অংশগ্রহণ করে এবং পাবলিক প্রোকিউরমেন্টে অংশগ্রহণের সময় তারা যে সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হন সে সম্পর্কে আলোচনা করেন।

শি ট্রেডস ইনিশিয়েটিভের মিসেস মা ডিয়াইনা জেম আরবো তার উপস্থাপনায় একটি জেন্ডার-সংশ্লিষ্ট মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন ফ্রেমওয়ার্কের পাশাপাশি নারী-মালিকানাধীন ব্যবসার একটি উৎকৃষ্ট সংজ্ঞা তুলে ধরেন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায় জেন্ডার সংক্রান্ত বিধানগুলি বুঝতে এবং প্রক্রিয়াটির পথনকশা তৈরি করার উপায় সম্পর্কে জোর দেন। তিনি একটি অ্যাকশন প্ল্যান এর উদাহরণ উপস্থাপন করেন যা জেন্ডার-সংশ্লিষ্ট এম এন্ড ই ফ্রেমওয়ার্কের প্রভাব পরিমাপ করবে। তিনি আউটপুট সূচকগুলিকে স্মার্ট (নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক এবং সময়ভিত্তিক) করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। পরিশেষে, তিনি একটি অ্যাকশন প্ল্যানের পাশাপাশি সুপরিকল্পিত রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন, যার জন্য দেশের সকল প্রোকিউরিং এনটিটিজ থেকে একটি কাঠামোবদ্ধ ডেটাবেস প্রয়োজন হবে।

আইটিসি এবং বিপিপিএ যে জেন্ডার -সংশ্লিষ্ট মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম ডিজাইন এবং প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পদ্ধতি উপস্থাপন করে, যেখানে প্রধান মেট্রিক্স, ডেটার প্রয়োজনীয়তা এবং স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়। গ্রুপ সেশনে আরও আলোচনা করা হয় কিভাবে জেন্ডার সূচকগুলিকে একীভূত করা যায় এবং সরকারি সংস্থা ও নারী-মালিকানাধীন ব্যবসাগুলোর মধ্যে ডেটা শেয়ারিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।

ইভেন্টটি এসপিপি পলিসির বাস্তবায়ন, মনিটরিং এবং ইভ্যালুয়েশন শক্তিশালীকরণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার উপর গ্রুপওয়ার্কের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। স্টেকহোল্ডাররা নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলিতে একমত হন: সকল স্তরে নীতি গ্রহণে সরকারের প্রতিশ্রুতি, নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং প্রোকিউরমেন্ট কর্মকর্তাদের জন্য উপযুক্ত সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডেটা সিস্টেম গড়ে তোলা ও পারফরম্যান্স সূচকের উন্নয়ন। এ সেশনগুলো মডারেট করেন ফেরদাউস আরা বেগম, সিইও বিল্ড। একটি বড় সংখ্যক পাব্লিক প্রকিউরমেন্ট এন্টিটি, মহিলা টেন্ডারার, মহিলা উদ্যোক্তা , সংলিস্ট সহায়ক প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করে ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর