আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না উদ্ধারকর্মীরা। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে তুরস্কভিত্তিক এ বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ৪৯৫ জনে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হয়েছেন আরও ১০৮ জন। গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তাদের। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫২৪ জনে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ২ হাজার ১১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামাসযোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
জিম্মিদের মুক্ত করতে সেদিন থেকেই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাস পর যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তবে দুই মাস না পেরোতেই, জিম্মি বিনিময় ইস্যুতে মতানৈক্যের জেরে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
হামাসের হাতে নেওয়া ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সামরিক অভিযান চালিয়ে এসব জিম্মিকে উদ্ধার করবে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল এবং সব জিম্মিকে মুক্ত করা না হওয়া পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।
Leave a Reply